পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

দোতারা।। ৮ম পর্ব।।

ছবি
*কবি সুবীর সরকারের কলমে     লোকশিল্পী মুনমুন বর্মণ  'কুচবিহারত হামার বাড়ি ঘাটাত দেখঙ ভইসা গাড়ি ভইসা গাড়িত ছই নাই ভইসের গলাত  ঘান্টি নাই গাড়ি চলে রে এলা কাদো রে পন্থে' লোকগান ভাওয়াইয়া আমাদের প্রাণ।আমাদের সম্পদ।লোকজীবনের আবহমান যাপনের ছবি ধরা থাকে এই গানে।কি এক মায়া!কি এক ম্যাজিক এই গানে! কত গুণী,কত নামী ও অনামী শিল্পীরা আবহমান কাল ধরে বহন করে আসছেন এই গানের ধারাবাহিকতা তাদের নিরলস চর্চার মধ্য দিয়ে। মুনমুন বর্মণ।মাথাভাঙ্গার মেয়ে।উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন।তরুণ প্রজন্মের মুনমুন বর্মণ তার কণ্ঠের স্বকীয়তায় শ্রোতাদের আগ্রহ অর্জন করেছেন।বর্তমানে বিবাহসূত্রে মেখলিগঞ্জে।মুনমুনের শুরুর দিনে আমি খুব কাছ থেকে তার একাগ্রতা,নিষ্ঠা ও আগ্রহ দেখেছি লোকগানের প্রতি।লোকগান নিয়ে নিরন্তর নিরীক্ষা করেছে সে। বাড়িতে ছোট থেকেই পেয়েছে ভাওয়াইয়ার পরিবেশ।বাবা মজেন বর্মন এবং কাকা,পিসিরা গানেরই লোক।মজেন বর্মন দোতরা,ঢোল বাজান।লোকগানের ভেতর দিন কাটাতে মুনমুনদের।বোন লোকনাচ করে।ভাওয়াইয়ার তালিম নিয়েছেন মাথাভাঙ্গার অনন্ত মাস্টারের কাছে।পরবর্তীতে নানান গুণী ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য তার জীবন ও গানকে পুষ্ট করে

চা পাতা ✒ শারদীয়া সংখ্যা ✒ মহালয়া ২০১৯

ছবি
          স  ম্পা  দ  কী  য় ঈশ্বরকে যেখানে রাখার কথা সেখানে না রেখে শুধু বড় বড় প্যান্ডেল বানাচ্ছি। বিচিত্র আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলছি জগৎকে। অথচ যেখানে আলো জ্বালবার কথা  ছিল অন্ধকার থেকে গেছে সারাবছর। সাধনার একটা স্তরে এলে নাকি পূজার বাহ্যিক দিকগুলোর কোন প্রয়োজনই থাকে না, তখন পূজা হয়ে ওঠে মানসিক বিষয়। সাধক চেতনার এমন একটা স্তরে পৌঁছে যান যে তিনি ধ্যানযোগেই ঈশ্বরকে ভোগ নিবেদন করতে পারেন। তিনি ধ্যানযোগেই পেয়ে যান ফুল, বেলপাতা ও নীলপদ্মের সন্ধান। অবশ্যই উৎসব আবশ্যিক।  বাঙালী জাতি উৎসব প্রিয় জাতি। প্রাণের উৎসবে প্রিয়জনের মিলনের জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকি আমরা। ঢাকের বোল,  কাশফুলের সৌন্দর্য আমাদের স্বর্গসুখ এনে দেয়। এই সুখ তো একটি দিনমজুরের ছেলেও পেতে চায়।  পূজা এলেই সে তার বাবার মুখের দিকে তাকালে শরতের আকাশে অন্ধকার দেখে। একটা সস্তা জামা কত সুক্ষভাবে দরদাম করতে থাকেন বাবা।  প্রতিবছর নতুন জামা অনেকেরই হয় না। একটা বাচ্চার সেই মনের অবস্থাটা যদি একটু ভাবেন।  ক্লাবে ক্লাবে সরকার টাকা বিলোচ্ছেন, যদি গ্রামে চাষাভুষো মানুষের বাচ্চাদের জামা কিনে দিতেন, তবে কি হত না! শিবের মাথা দুধ ঢ

চা পাতা সাপ্তাহিক

ছবি
    স ম্পা দ কী য়       কবিতা লিখতে এসে আমরা এত বড় হয়ে যাই কেন। কেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাবি আকাশকে ছুঁয়ে ফেলছি। মঞ্চের নীচে হয়ত সেই শব্দগুলো পড়ে আছে।  যারা মঞ্চ বেঁধেছেন সেইসব মানুষের শব্দ,  নারকেলের রশি, ছেঁড়া কাপড়, পিনকাঠি, আধপোড়া বিড়ি, সব পড়ে আছে। একবার মঞ্চে ওঠার সাথে সাথে কেন ভুলে যাই আমরা। আসল কবিতা হয়তো মঞ্চের নীচেই পড়ে থাকে,  চাপা পড়া ঘাসের মতো হলদেটে সাদা রঙের  সেইসব কবিতা। এক এক বার মঞ্চে ওঠে যদি মঞ্চের নীচ থেকে একটা করেও শব্দকেও তুলে আনা যেত,  তাহলে কাদা দিয়ে শুধু মূর্তিই তৈরি হত, হয়তো কাদা ছোড়াছুড়ি হত না।                  জ্যোতি  পোদ্দার -এর কবিতা জলভর্তি বাতাসা রাস্তা বরাবর হাঁটছে হাঁটছে কথা বলা লোকটি। আর দুই হাতে একে তাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে বিলিয়ে দিচ্ছে কতিপয় গোল গোল গুড়ের বাতাসা।                    চিনির বাতাসা। তিনি হাসছেন আর হাসতে হাসতে ছুটতে ছুটতে কাঁধের ব্যাগের ভেতর থেকে পাটকাঠি হাতে তুলে আনছেন                            গোল গোল বাতাসা। কোনটা চিনির নয়। কোনটা আবার গুড়ের নয়। কোনটা নরম তুলতুলে সাদা সাদা তুলার বাতাসা ব্যাগের ভেতর থেকে বের

দোতারা।।৭ম পর্ব

ছবি
' তুই যে ধন দিলু মোর দোতরা ও মুই ভুলির পারিম না' সন্তোষ কুমার বর্মণ । লোকশিল্পী। নিজেও ভাওয়াইয়া লেখেন।ময়নাগুড়ির পুটিমারী গ্রামে বাড়ি।বাড়িতে খুলেছেন ভাওয়াইয়া গান প্রশিক্ষণের স্কুল। বাবা ও মা শ্যামচন্দ্র বর্মন এবং জলেশ্বরী বর্মন এর কাছেই প্রাথমিক লোকগানের দীক্ষা নিয়েছেন।বাবা তুক্ষা গাইতেন।কীর্তন করতেন।পরবর্তীতে পেয়েছেন বিভূতিভূষণ মোদক (অন্ধ গিদাল) প্রেমানন্দ রায়,দীনেশ রায়,দীপ্তি রায়,আজিমুদ্দিন দের মতন গুনিজনেরা স্নেহ।শিখেছেন কত তাদের থেকে। ঝুঁকে পড়েছেন লোকগানের মরমী দুনিয়ায়। সারাজীবন গান নিয়েই থাকতে চান।লোকসংগীত ভাওয়াইয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে চান নুতন উদ্যমে।হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টিকে সংরক্ষণ করতে চান।নানা প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্রকে সঙ্গী করেই সন্তোষ কুমার বর্মনের নুতন স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাওয়া।আর বুকের ভিতর থেকে তিনি গান ছড়িয়ে দেন, মায়া বিছিয়ে দেন- কোন বা দ্যাশে গেইলেন, মইষাল ও, আরে ও মইষাল,বাথান দ্যাখোঙ ধুয়া। তোমার বাদে এঁলাও আছে আঞ্চলের          গুয়া,মইষাল ও।     বন কাটিয়া বসত্ হইলেক রে, আরে ও মইষাল,গেইলেন তোমরা ছাড়ি। কোন জঙোলোত্ বাথান এলা,কুন্ঠে কইল্লেন               ব
ছবি
  স     ম্পা     দ     কী     য় ছেলেকে প্যান্ট শার্ট পরিয়ে কোন একটা প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দিয়ে আসার পর যে সময়টুকু থাকে সেসময় আমরা তর্কে বসি,  বাংলা ভাষার ভবিষ্যত কি ? আদৌ কি কেউ বাংলায় কথা বলবে?  এত এত কবিতা গল্প উপন্যাস কারা পড়বে? সরু,  লম্বা, মোটা,  বেঁটে,  দাঁড়িওয়ালা,  দাঁড়িছাড়া বিভিন্ন রকমের বুদ্ধিজীবী। সারাক্ষণ ইংরেজি বা উর্দু বললে যতটা  বাংলাভাষার ক্ষতি হবে, একবার হিন্দি বললে যেন তার কয়েকগুন বেশি ক্ষতি করা হবে,  এভাবে বোঝানো হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে কেউ এটাও বলা হচ্ছে যে অমুক দলটা বাংলাভাষার, আর তমুক দলটা হিন্দিভাষার।  আপনারা ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক হলে আমরা ভাষা নিয়ে সাম্প্রদায়িক হব। আমার ভাষায় আমি কথা বলব কে আমার ঠোঁট চেপে রাখবে,  কার এত সাহস।  আতলামি কমানো হোক। নিজের বাচ্চাকে যেখানেই যে ভাষাতেই পড়ান না কেন,  মাতৃভাষা পড়ান, ভালোবাসতে শেখান বাংলার মূল্যবোধকে ব্যাস মিটে গেল সব।          ********ক  বি  তা ****** মানচিত্রের বদলে উ দ য়া র্ণ ব   ব ন্দ্যো পা ধ্যা য় রাত অস্থির বালিশের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে আশ্চর্য সব পোকা বিছানার চ

দোতারা।। ৬ষ্ঠ পর্ব।।

ছবি
 গোয়ালপাড়ার লোকগানের রানী প্রতিমা বড়ুয়া মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু তার স্মৃতি।আবার মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার স্মৃতি।স্মৃতি আমাদের কাঁদায়,হাসায়,দূরাগত করে তোলে।50 ছুঁতে গিয়ে আজকাল স্মৃতির ধূসর তাঁবুর ভেতর আমি ঢুকে পড়ি।কষ্ট হয়।আনন্দও হয়।কত কত স্মৃতি জড়িয়ে এই যে অন্তহীন বেঁচে আছি আমি!জীবনের মূল্যবান স্মৃতিগুলোকে নিয়ে মাঝে মাঝে ভাবছি লিখবো।মনোবেদনার দহে ভাসিয়ে দেব কাগজের নৌকো।সেটা 1996 সাল।অসমের গৌরীপুর শহর।গৌরীপুর মানে একশো বলির দুর্গাপুজো,রাজা প্রভাত বড়ুয়া,রাজকুমারী নীহারবালা বড়ুয়া,রাজকুমার প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়া আর লালজি রাজার ছড়িয়ে থাকা মিথগুলির শরীরে হাত রাখি।আমার বন্ধ চোখের সামনে ছুটে আসে সেই কবেকার এক পৃথিবী থেকে হাতি মাহুত ফান্দি আর হাতি মাহুতের কত কত গান।ইতিমধ্যেই প্রমথেশের 'মুক্তি' ছবিতে দেখেছিলাম রাজকুমার পিসি বড়ুয়ার প্রিয় হাতি জংবাহাদুরকে।যাকে নিয়ে রচিত হয়েছিল গোয়ালপাড়ার লোকগান, কালী দাশগুপ্ত যা সংগ্রহ করে গেয়েছিলেন- ' বালাকুঠির ওরে টোকন ব্যাপরী তেরশো টাকা দিয়ে ব্যাপারী  কিনিয়া রে আইনছেন হাতি আরে জংবাহাদুর হাতির নাম তেরশো টাকা হাতির দাম

চা পাতা সাপ্তাহিক

ছবি
* স ম্পা দ কী য় *   সম্পাদকীয় লেখাটা অনেক কঠিন কাজ। কতকিছু লিখতে গিয়ে পিছিয়ে আসতে হয়।   লিখতে ইচ্ছে করে কবিতার নাম করে যে পুরস্কারগুলি দেওয়া হয় তার অধিকাংশই মুখ দেখে দেওয়া হয়।  অনেক পত্রিকাকে দেখি তাদের পত্রিকারই সম্পাদকমণ্ডলীর কারো হাতেই পুরস্কার তুলে দিচ্ছে।  কোথাও আগে টাকা নেওয়া হচ্ছে তারপর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।  কবিতার অনুষ্ঠানে সিনিয়র কবিদেরও দেখি নিজের কবিতাটা পড়ে কেটে পড়ছে অথবা বাইরে কোথাও দাড়িয়ে ফটো তুলছে অথবা বিড়ি ফুঁকছে। অনেক প্রকাশক নিজেও লেখক বা প্রাবন্ধিক  বা কবি, তাদের নিজেদেরও বই প্রকাশ হচ্ছে নিজেদের প্রকাশনা থেকে।  নিজের বইয়ের প্রচার তারা যেভাবে করছে, একটি তরুণ ক্ষেত্রে সেভাবে করছে না।   প্রিয় পাঠক আপনাদের প্রিয় পত্রিকা চা পাতা প্রকাশ করতে গিয়ে এরকম বা অন্যরকম কিছু ভুল দেখতে পেলে  অবশ্যই জানাবেন।          ************* ক  বি  তা ************* কেমোফ্লেজ শু ভ্র দী প  রা য় এমন একটা বোতাম থাকলে পারত  যা  খুললে পৃথিবীর সমস্ত বুকে পৌছতে পারতাম। অনেক ছোট থেকেই আমি জানি অনাঘ্রাতা বুকে কচি ঘাসফুলের গন্ধ-- কাম জাগেনা, স্নেহে জর্জরিত হই। অথচ সেই দূর

দোতারা।। ৫ম পর্ব।।

ছবি
দোতারা ।।  ৫ম পর্ব ।। কবি সুবীর সরকারের কলমে লোকশিল্পী ললিত চন্দ্র রায়   ' বাচ্চা বাপই সোনার চান্দ গরু দুইটা আইলত বান্ধ' উত্তরের মাটির গান।প্রানের গান।শরীর ও মনে এক সুরের আবেশ জড়িয়ে ধরে।যার রেশ থেকেই যায়।কত কত নুতন গান লিখছেন গাইছেন জানা অজানা কত লোকশিল্পী।পূর্ন হয়ে উঠছে আমাদের লোকগানের ভান্ডার। লোকগানের মধ্য দিয়েই তো উঠে আসে লোকজীবনের জীবন্ত সব ছবি।দৈনন্দিন যাপনের কথা। 'বাউকুমটা বাতাস যেমন ঘুরিয়া ঘুরিয়া মরে ওই মতন মোর গাড়ির চাকা পন্থে পন্থে ঘোরে ও কি গাড়িয়াল মুই চলং রাজপন্থে' একদিন এই অদ্ভুত গতিময় গানটি শুনেছিলাম ললিত চন্দ্র রায়ের কণ্ঠে।ললিত চন্দ্র রায় অসমের গোলকগঞ্জ অঞ্চলে থাকেন।পেশায় শিক্ষক এই গানে ডুবে থাকা মানুষটি লোকগানের প্রচার ও প্রসারের কাজেও কাজ করে যাচ্ছেন। ললিত চন্দ্র রায় চটকা গানে অত্যন্ত পারদর্শী।বেতার ও দুরদর্শন সহ নানা জায়গায় গানের পর গান গেয়ে চলেছেন তিনি।মঞ্চে তিনি জাদুকরের মতন।মাতিয়ে তোলেন দর্শক শ্রোতাদের। প্রতিমা বড়ুয়া,আলাউদ্দিন সরকার,আব্দুল জব্বার,কেরামত আলী,মানিক আলী-র সান্নিধ্য পেয়েছেন। তৈরি করেছেন উত্তরসূরি।পরবর্তী প্রজন্মের লোক