চা পাতা সাপ্তাহিক




   স ম্পা দ কী য়

      কবিতা লিখতে এসে আমরা এত বড় হয়ে যাই কেন। কেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাবি আকাশকে ছুঁয়ে ফেলছি। মঞ্চের নীচে হয়ত সেই শব্দগুলো পড়ে আছে।  যারা মঞ্চ বেঁধেছেন সেইসব মানুষের শব্দ,  নারকেলের রশি, ছেঁড়া কাপড়, পিনকাঠি, আধপোড়া বিড়ি, সব পড়ে আছে। একবার মঞ্চে ওঠার সাথে সাথে কেন ভুলে যাই আমরা। আসল কবিতা হয়তো মঞ্চের নীচেই পড়ে থাকে,  চাপা পড়া ঘাসের মতো হলদেটে সাদা রঙের  সেইসব কবিতা। এক এক বার মঞ্চে ওঠে যদি মঞ্চের নীচ থেকে একটা করেও শব্দকেও তুলে আনা যেত,  তাহলে কাদা দিয়ে শুধু মূর্তিই তৈরি হত, হয়তো কাদা ছোড়াছুড়ি হত না।
    
      
    
জ্যোতি  পোদ্দার -এর কবিতা

জলভর্তি বাতাসা

রাস্তা বরাবর হাঁটছে হাঁটছে কথা বলা লোকটি।
আর দুই হাতে একে তাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে
বিলিয়ে দিচ্ছে কতিপয় গোল গোল
গুড়ের বাতাসা।
                   চিনির বাতাসা।

তিনি হাসছেন আর হাসতে হাসতে
ছুটতে ছুটতে কাঁধের ব্যাগের ভেতর থেকে
পাটকাঠি হাতে তুলে আনছেন
                           গোল গোল বাতাসা।

কোনটা চিনির নয়।
কোনটা আবার গুড়ের নয়।
কোনটা নরম তুলতুলে সাদা সাদা
তুলার বাতাসা ব্যাগের ভেতর থেকে
বের করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন মাথার উপর
       মেলে রাখা শূন্য শূন্য প্রকাণ্ড শূন্য চাতালে।

সেগুলোই মেঘ মেঘ ধবধবে সাদা মেঘ।
আর মেঘের শরীরে কালো কালো বুটি বুটি
                                                  শস্যদানা 
একেকটি জলঘর।
পাশেই প্রকান্ড বন সবুজ সবুজ সিনারি;
জঙ্গল জঙ্গল সবুজ আমাজান
আর সেল্ফি পর্যটকদের হাট বাজারে
পাখিরা
          পশুরা খুশির ঢেকুর
তুলতে না তুলতেই কমলা রঙের আগুন
লাফিয়ে লাফিয়ে গাছের ডালে ডালে
ঝুলে ঝুলে আছড়ে পড়ছে ঘাস রঙের কার্পেটে।

আহা! কী দারুন খুশি খুশি দিন নিয়ে
কথা বলা লোকটি নরম তুলতুলে
গোল গোল জলভর্তি বাতাস
ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে মাথার উপরে
                                      প্রকাণ্ড শূন্য চাতালে।

গোল গোল জলভর্তি বাতাসা
উড়ছে উড়ছে
হাতের কাছে হাতের ভেতর
নিজস্ব জমিনে দাগকাঁটা সীমানায়।

ইচ্ছে করে আলপিনে ফুটিয়ে দেই
গোল গোল জলভর্তি বাতাসা।


শুভদীপ  আইচ এর দুটি কবিতা


বোধন    

তুমি ভাবতেই পারো এসবে আমার কিই বা আসে যায়
তবু উঠোনের নিভৃত কোনে কিছু ক্ষিদে ফেলে আসে আলসে কুকুর

এখন নিঝুম ঝাঁপ
নাভীদেশ থেকে ভেসে আসে শঙ্খধ্বনী-

                    
                    উল্লাস !

কিছুটা চকচকে
দেহজ আতর বিনিময় করতে গিয়ে কিছু বোধ রপ্তানি করে ফেলি
সময়ের আগে গামোর হয়ে যাওয়ার মিসকল পাই কৃষকবউ এর থেকে ।


মেমোরিজ @ সেভেন্টিন 

                           
মা হওয়ার পর মেয়েরা কিভাবে আরো সুন্দরী হয়ে ওঠে
এসব সাতপাঁচ ভাবছিলাম -
কাল দুপুর ও রাত ।
এখনো ইকোনোমির ক্লাস জুড়ে তোমার সংক্ষিপ্ত পোশাকের কথা মনে পড়ে
সিন্স ক্লাস ইলেভেন -
নগ্ন উরুর সাথে আমার প্রথম পরিচয়
আশেপাশে এতটা নগর গড়ে ওঠেনি
আর আমি নাগর হওয়ার থেকে ছিলাম এক হাত দূরত্বে
মুখোমুখি হওয়ার যাবতীয় সুযোগ উপেক্ষা করতে গিয়ে
আমার ঠোঁটের নিচে একদলা ঘাঁ
তোমার যত ছদ্ম অভিশাপ
সেসব পেরিয়ে যেতে যেতে দেখি
অনেকটা পথ চলে এসেছি
কলেজ পাড়ার কাছে এখন অনেকগুলো ফ্ল্যাট
কাঠের দোকান টা এখন আর দোতলা নেই
পুড়ে যাওয়ার পর সেটা এখন শক্তপোক্ত পাকা ঘর

যেভাবে প্রতিটি পুড়ে যাওয়ার পরে আমরা ভীষণ শক্ত হয়ে উঠি ।


অভিজিৎ দাসকর্মকার  -এর কবিতা

শিলা কী যাবানী


বৈরিতার পথে শল্কমোচনের
বিজ্ঞাপনি গান
       শ্রীখোল আর দোভাষী বাঁশি
         শ্রীরাধার মুলতুবি করা
৮টি গির্জার ঘন্টা-
শখি রে...
বলে গেয়ে উঠেছিল ঘুমপাড়ানি গান-
আর
দক্ষিণমেরুর লিমেরিকে
মনপথ শরীরের অজস্র রিপুর
বাবুই বুনন আঁকে
তোলপাড় পিত্তরস হয়ে পড়ে থাকে
রাস্তায় চাইনিজ রোশনাই-
দিপ্ দিপ্ করে বেজে চলেছে
'শিলা কী যাবানী...'

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১