স     ম্পা     দ     কী     য়



ছেলেকে প্যান্ট শার্ট পরিয়ে কোন একটা প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দিয়ে আসার পর যে সময়টুকু থাকে সেসময় আমরা তর্কে বসি,  বাংলা ভাষার ভবিষ্যত কি ? আদৌ কি কেউ বাংলায় কথা বলবে?  এত এত কবিতা গল্প উপন্যাস কারা পড়বে? সরু,  লম্বা, মোটা,  বেঁটে,  দাঁড়িওয়ালা,  দাঁড়িছাড়া বিভিন্ন রকমের বুদ্ধিজীবী। সারাক্ষণ ইংরেজি বা উর্দু বললে যতটা  বাংলাভাষার ক্ষতি হবে, একবার হিন্দি বললে যেন তার কয়েকগুন বেশি ক্ষতি করা হবে,  এভাবে বোঝানো হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে কেউ এটাও বলা হচ্ছে যে অমুক দলটা বাংলাভাষার, আর তমুক দলটা হিন্দিভাষার।  আপনারা ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক হলে আমরা ভাষা নিয়ে সাম্প্রদায়িক হব। আমার ভাষায় আমি কথা বলব কে আমার ঠোঁট চেপে রাখবে,  কার এত সাহস।  আতলামি কমানো হোক। নিজের বাচ্চাকে যেখানেই যে ভাষাতেই পড়ান না কেন,  মাতৃভাষা পড়ান, ভালোবাসতে শেখান বাংলার মূল্যবোধকে ব্যাস মিটে গেল সব। 



        ********ক  বি  তা ******



মানচিত্রের বদলে

উ দ য়া র্ণ ব   ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়


রাত অস্থির
বালিশের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে
আশ্চর্য সব পোকা

বিছানার চাদর মুড়ে পড়ে আছে জ্বর
যেমনটা রক্তের উপর ভেসে থাকা জলীয় বাতাস পিণ্ড নেশাতুর পৃথিবী

একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাসে পোড়া হয় শবের রুগ্ন ঠোঁট এখন সেই ঘ্রাণ-এর তলে সাদা ফটফটে সূর্য
কিংবা আলোর নির্যাস 

এবং ঘুমিয়ে আছি আমরা



মৃত্যু অথবা আয়ুক্ষয়

খু র শি দ  আ ল ম

বিন্দু আমার কাছে ভারী কোনো সংকেত নয় 

পিঁপড়েদের মিছিল কিম্বা কাকের ধ্বনি কখনো গাণিতিক সূত্র মেনে চলে না 

যেমন কালো বিড়াল দেখে থমকে যাওয়া 

ভাগ্যবিড়ম্বনা, অতিলৈকিক বিশ্বাসের বস্তু 

মৃত্যু অথবা আয়ুক্ষয় সাধারণত একটি কমন ফ্যাক্ট



বৃন্দাবনসুন্দরী

প ঙ্ক জ  ঘো ষ


কলসী ভেসে যায়না কাঁপা কাঁপা হাতে
সব ভয় ভেসে গেছে কালিন্দীর জলে
পাগলকরা চাল-এ হেঁটে যায় বৃন্দাবনসুন্দরী
গুনগুন গান গায় আনন্দের।
কালো মেঘে বৃষ্টি খোঁজে শুধু--
দু-হাত ছড়িয়ে ভিজবে বলে
দূরে কোথাও বাঁশি বাজে করুণ সুরে
সুন্দরী রেঁধে যায় চকচকে চোখে।



একটা আত্মজীবনী

প্র সে ন জি ত  রা য়


    কথায় কথায় আত্মসমর্পণ করে বাসন্তীক ঠোঁট দুটো
    বিদগ্ধ রাতে পড়ে থাকে কেরোসিনের কুপি
    এঁটো ভাত আর মাটির থালি... 

    অন্ধকারে শূন্যতা বাড়ে, পরিস্কার দেখতে পাই বিক্ষত নদীর
    ত্বক, স্বপ্নের ঘোরে মরা মানুষের মতো ছুটতে থাকি
    ঠোঁট দুটো আরো একবার কেঁপে ওঠে কুকুর ডাকার মতো 

    জলতল ছুঁয়ে নেমে যাওয়া রক্তাক্ত ঘুঙুরের গান
    একটা আত্মজীবনী--- আমার কিংবা নদীর! 

                         
                             
     
গোবর নিকানো হয়নি
      
   শ ক্তি  পু র কা ই ত


পিঠে বানাবে বলে শিলে
চাল বাটছিল , মা ।
       
পুকুর পাড় থেকে  এক আঁচল
শাপলা তুলে ভেজা কাপড়ে
দাঁড়িয়ে ছিল , বোন ।
বাবার  চিৎকার  শুনে‘ থ ‘
‘কে , কোথায় আছিস
তৈরি হয়ে নে ‘ !
   
ওরা এসে পড়বে
এক্ষুনি ।
                     
ওদিকে দাউ দাউ করে পুড়ছে
      বামুন পাড়া ।
মা ছুটে গিয়ে গোয়ালঘরে ঢুকে
গ্রুগুলোকে সব ছেড়ে দিল ।
তুলসীতলায় জল ঢেলে
              প্রণাম করে
তারপ্র সবাই বেরিয়ে পড়লাম
নৌকায় চেপে , পদ্মা পেরিয়ে
                       চললাম। 
                 
বাবার মাথায় ভাঙা টিনের  ট্যাঙ্ক
সামান্য কিছু জামা-কাপড় নিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে এ দেশে  পৌঁছলাম ।
আঁচের গনে গনে ধোঁয়াই
বাবার বুকে শ্বাস উঠলে বলে ,‘ জানিস খোকা
দেশটার জন্য কিছু করতে  পারলাম না ,রে
              বড্ড দেরি হয়ে  গেল‘ !

                                                                           দেশ ভাগের এত বছর  পরও    
আফশোস করে মাকে বলতে শুনি
    ‘বউমা , শেষবারের মত উঠোনটা একবার ঝাট দিয়ে আসিস
      ঘরটাতে কতদিন গোবর নিকানো হয়নি '।
   

সম্পাদক - তাপস দাস

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা পাতা সাপ্তাহিক