চা পাতা সাপ্তাহিক




* স ম্পা দ কী য় *
  সম্পাদকীয় লেখাটা অনেক কঠিন কাজ। কতকিছু লিখতে গিয়ে পিছিয়ে আসতে হয়।   লিখতে ইচ্ছে করে কবিতার নাম করে যে পুরস্কারগুলি দেওয়া হয় তার অধিকাংশই মুখ দেখে দেওয়া হয়।  অনেক পত্রিকাকে দেখি তাদের পত্রিকারই সম্পাদকমণ্ডলীর কারো হাতেই পুরস্কার তুলে দিচ্ছে।  কোথাও আগে টাকা নেওয়া হচ্ছে তারপর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।  কবিতার অনুষ্ঠানে সিনিয়র কবিদেরও দেখি নিজের কবিতাটা পড়ে কেটে পড়ছে অথবা বাইরে কোথাও দাড়িয়ে ফটো তুলছে অথবা বিড়ি ফুঁকছে। অনেক প্রকাশক নিজেও লেখক বা প্রাবন্ধিক  বা কবি, তাদের নিজেদেরও বই প্রকাশ হচ্ছে নিজেদের প্রকাশনা থেকে।  নিজের বইয়ের প্রচার তারা যেভাবে করছে, একটি তরুণ ক্ষেত্রে সেভাবে করছে না।

  প্রিয় পাঠক আপনাদের প্রিয় পত্রিকা চা পাতা প্রকাশ করতে গিয়ে এরকম বা অন্যরকম কিছু ভুল দেখতে পেলে অবশ্যই জানাবেন।
  
     ************* ক  বি  তা *************


কেমোফ্লেজ


শু ভ্র দী প  রা য়

এমন একটা বোতাম থাকলে পারত  যা  খুললে পৃথিবীর সমস্ত বুকে পৌছতে পারতাম।
অনেক ছোট থেকেই আমি জানি অনাঘ্রাতা বুকে কচি ঘাসফুলের গন্ধ-- কাম জাগেনা,
স্নেহে জর্জরিত হই। অথচ সেই দূর্ব্বা ডলে ডলেই আমার কলম ভেজাই। আমার পুং অহমিকার
ফ্ল্যাগ বেয়ারার। স্পেকট্রাম বাদ দিয়েও হাজার রঙের কলমের এক ফ্যাসিনেটিং সংগ্রহ আমার।
এক এক ধরনের বুকের বর্ণনায় এক এক ধরনের কলম।এবং পাঠক এটা খেল, চেটেপুটেই খেল।

আমি একজন  মাস্টার ক্রাফটসম্যান। তবু সন্ধ্যেবেলা কলমের নামে ছুরিতে শান দিই।


মোরগফুল


রা জ শ্রী  ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়

একদিন ঘর ছেড়ে ছিলাম ৷ পুরানো ঘাট ,নাটমন্দির , আম সুপারির বাগান সব ছেড়ে এসেছি ৷ শুধু ছাড়তে পারিনি সেইসব স্মৃতি , যেখানে তুই মশগুল হয়ে আছিস ৷ যেখানে বৃষ্টির ফোঁটায় স্বপ্নদের বসতবাড়ি ৷ হাজার বছরের পুরানো শিব মন্দিরের গা বেয়ে নেমে গেছে অজস্র শেকড় ৷ যে শেকড় খোঁজ রাখে আমিদের প্রতিটি দিনযাপনের কথা ৷ যে মেঘ দূত হয়ে আসত , যে মোরগফুল আমাদের যাতায়াতের পথে ফুটে থাকত , তারা জানে ,গাছের গায়ে ঢিল বেঁধে আমরা যে অঙ্গীকার করেছিলাম , তা আর রাখা হয়নি ৷ তুই ছেড়ে গেছিস ৷ বৃষ্টি শুকিয়ে গেছে ৷ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের দায় তোকে কোতোয়ালে দিতে পারিনি ৷ কারণ তোর দেওয়া কথাগুলো , কোনদিনই মুদ্রণ হয়নি ৷ আমি ঘুমের ভেতর নড়ে উঠি ,তুই পাশে শুয়ে শতাব্দীর নিদ্রায় ৷


শাওন প্রলাপ


তা নি য়া  ব্যা না র্জী

একদিন বৃষ্টি হয়েও তো আসতে পারো!
  বৈশাখী দিনে মেরুদন্ডে  মেরুকরণ জুড়ে আমি ভাবতে ভালোবাসি বাণভাসি প্রলাপ।

  প্রবল বর্ষার ভিত গেঁথে ওরা ঢেলে গেছে চোড়াবালি,
আমি ডুবে মরি অনন্তে, বুকে নিয়ে অবাক জলপান।

আমার শাওন কুচি তোমার খোলামকুচি হয়ে পাকখেয়ে পড়েথাকে তোমায় পবিত্র মেঘালয়ে।

এক এক করে ঋতু যায় আর আমি কড় গুনি,
শ্রাবণ এলে বুঝে নেব কড়ায় গন্ডায়,আমার একলা পরব অবগাহন বৃত্তান্ত।
 

তোমার মায়া জানলা



অ ভী ক  র ক্ষি ত

ঘুরে ঘুরে ফিরি সেই রাস্তায়
পরিচিত জানলারা ডাকে
অচেনা মানুষ - চেনা মানুষ
      তুমি নেই..
পথ-প্রান্তর যেন অচেনা
একোন মায়াতাবিজ আমার দেহে

অচেনা,অজানা মায়া আবদ্ধ করেছে আমায়

এ কোন ইন্দ্রজাল, নাকি চক্রবূহ  
 
পূর্ণিমার রাতকে গ্রাস
করেছে অমাবস্যার- নি:স্তব্ধতা

চাঁদের এ কোন রূপ

উত্তরের ধ্রুবতারার এ কোন প্রতিবিম্ব

   দক্ষিণে আজ উজ্জ্বল

ফিরতে চাই... ফিরতে চাই...আমি!

আবদ্ধ বাতাস শ্বাস রুদ্ধ করছে আমার

ঝাপসা হয়ে যাওয়া জানলায় আজ তুমি নেই।
 

চলো পাল্টাই


দী প্তি  রা য়

চলো সংকীর্ণ  চৌহদ্দি থেকে বেড়িয়ে পড়ি বিশ্বলোকের সন্ধানে।জীবনের চড়াই-উৎরাই  পেরিয়ে ঝুঁকেপড়া স্বপ্নের খোঁজে ফিরি। মায়াজাল কেটে কেটে দ্রুত হাতে লাল, নীল পেন্সিলে এঁকে ফেলি জীবনের জল রঙ ছবি।

চলো বদলে যাই চুপচাপ। হাঁটুজল ভেঁঙে ভেঁঙে জল জমিয়ে জমিয়ে একটা নদী বানিয়ে ফেলি। সেই নদীতে অতি ধীরে ধীরে বিষন্নতা ভেজাই। চলো কিছু স্পর্শ, গন্ধ,বোধের কাছে বিশ্বাস রাখি।

চলো বিশ্বসংসার উচ্ছন্নে যাওয়ার আগে হিংস্র শ্বাপদের  পাশে  মনুষ্যত্বের পতাকা পুঁতে আসি। চলো জীবনের কাছে হেরে যাওয়া মানুষগুলোর আঙুলে  আঙুল রাখি।

চলো অন্ধ ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম গড়ে তুলি।একসাথে মিশে থাক ভোরের আজানের সাথে কীর্তনের সুর। আলাদা আলাদা মন্দির মসজিদ, গীর্জা নয়,একটি দেউলেই  হজরতের পাশেই কৃষ্ণ আর  খ্রিষ্টের  মুর্তি  বসিয়ে আসি।

চলো ম্যাজিক লন্ঠন জ্বালিয়ে শহরের সবকটা অন্ধকার ঘরে বাতি জ্বালিয়ে আসি। চলো দারিদ্রের কাঁটাগাছে দুরন্ত গোলাপ ফুটিয়ে আসি। চলো বস্তাপচা কাব্যতন্ত্রের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে একটি সত্যিকারের কবিতা লিখে আসি!


সম্পাদক - তাপস দাস
লেখা পাঠাবেন - tapsds00@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১