চা পাতা ৯০
সম্পাদকীয়
রাম - রাবন, কৃষ্ণ- কংস, কৌরব-পান্ডব ধর্ম পুস্তকে লেখা আছে এদের সংঘাতের কথা । এই লড়াইগুলির প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল ধর্মকে অধর্মের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য । এরা কেউই কিন্ত পরস্পর বিরোধী ধর্মের লোককে খুন করে বাড়ি ঘর পুড়িয়ে ধর্মযুদ্ধ করেনি । আমি যেই ধর্মটা জানি তা থেকে কিন্তু এটাই জেনেছি ।
কবিতা
উদয় সাহা
মৃত্যু ও একটি পেঙ্গুইন
এক.
জলের দিকে হেঁটে চলে যায় কাঁকড়া
পজ্। রিজিউম। পজ্। রিজিউম ...
সন্ধ্যা হয়ে আসছে
দুই.
ঘর মানেই গর্ত
ঘরে ফিরে আসতে হয় দিনান্তে
ওঁত পেতে থাকে শৃগাল
জীবন-দ্বীপে গোধূলির শোভাযাত্রায় পেঙ্গুইন
স্পেসবারে পুলিশ ( চোর )
তিন.
নিম অন্ধকারে কেবল
চেয়ে থাকা৷ চেয়ে থাকা। চেয়ে থাকা...
নিভে গেছে পৃথিবীর আলো
চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে এই নক্ষত্রকোলাহল
মনে মনে বলি, দর্জি জীবন নিশান্তে
আমি নির্জন পান্ডুলিপির মুখোমুখি
চার.
প্রকান্ড আবছায়ায় শুয়ে আছি
সকাল,দুপুর, বিকেল সব বেলাই মৃত্যুদিন
এখানে সবাই পরিযায়ী পাখি ;
চিড়িয়াখানার চিত্রকল্প চোখে-মুখে
সঞ্চালিকা আচার্য
উষ্ণ হাতল
বড়ো ক্ষুদ্র কফিনে শুয়ে আছ―
ডালার মুখ শোওয়ার ঘরের দিকে।
এই কি অন্তিম শীত তবে?
যে সঘন সারস বারবার পাট ভাঙ্গে
জমাট বরফের কাছে সে কেবলই
অসুস্থ অবজ্ঞা পায়। তার কাছে দূরত্ব ভালো।
ফসল কেটে নেওয়ার পর নিঝুম প্রান্তর
হয়ত তাই ছাইয়ের কাছে নিজেকে প্রকাশিত করে
অপর কোনও স্থির নির্দেশে।
যখন দিগন্ত অবধি শুধুই ধুলোরঙ আকাশ ―
এই নিরুত্তাপ পটভূমিতে শান্তিলগ্ন খোঁজো!
অথচ কঠিন অলকানন্দার অভ্যন্তরে উজ্জ্বল গর্জন…
অথচ দরোজার আরও কাছে এগিয়ে গেলে আমি
তুমি আন্তরিক কেঁপে গিয়ে, তবু কোন ঘনিষ্ঠ দ্বিধায়
আমার স্পষ্ট হাত ধরতে এলে! বিস্মৃত শিল্পের আয়োজনে।
একে কি বেঁচে থাকা বলো, হে অভিজ্ঞ নিশ্চুপ?
দেবমিত্রা চৌধুরী
অবলিভিয়ন
কেউ হয়তো মারা যাচ্ছে,
অথবা কোথাও
বিপদ লাফিয়ে উঠছে দশহাজার কুকুরের মতো__
তবু কেন ছাদে বসে একা ভিজতে ইচ্ছে করছে আরো কিছুক্ষণ?
ভুল হচ্ছে হয়তো ফের__
এসব আমাকে আর অন্ধকার করে না এখন।
আমার ইচ্ছেটাও এভাবে চরিত্র হয়ে ওঠে,
আমি ওর চামড়ায় ঢুকে পড়ি খুব চুপচাপ।
ভেতরে অধ্যায়ী মুখ আরো এক বিভ্রমের দিকে সরে যায়...
অনিমেষ
অন্তর্দহন
শেষটুকু একটা মধুরতা।আর সমাপ্ত ভাষণের পরেই বুঝতে পারি ক্রমশ নিভে আসছি।দূরে সরে যাচ্ছে মানুষ আর তার ভেতরের আর্তনাদ।আরও একটু চেঁচাই, চিৎকার পার করে আসে ঘনঘন নেতিয়ে পড়া।মুখ আসলে নিজের ছায়া খুঁজতে খুঁজতে বন্দি হয়ে আসি। নিজেকে লুকিয়ে নিই।এই যে অবিরাম ব্যথা আর শোকের আবছা খেলা সবটা একটা ক্রমবর্ধমান বিকাশ। সবাই চলছে, অন্ধকার মেখে ,আলো আরও সংলাপহীন। এরপর শেষ গন্তব্য থেকে আরও একটু দূরে একা হয়ে পড়ি, অবিশ্বাস থেকে যে দূরত্ব জন্ম নেয় ,তার ডানায় ভর করে ওঠে শোক। পুরোটাই একটা ধাঁধা । ধাঁধা মানেই গহীনে তলিয়ে যাওয়া উচ্চরাশি।।এরপর নিস্তেজ ঋতু।।আমি পথ বদল করে ফেলি।বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হয়।শোক শুকিয়ে আসে ,ধীরে ধীরে। আমরা যেখানে হেঁটে যাই সেখানে পাহাড় একা ,একা একটা অবস্থান, মাঝপথে আটকে গেলে,আশ্রয় নিও কোনো তরুণ পাহাড়ের বুকে, লুকিয়ে রেখো মুখ,যত দাগ রেখে দিও ওই পিঠে, গোপনে অজান্তে...
সুস্মিতা সাহা
ওপরতলা
পিয়ানোর সিঁড়িগুলি ধরে পায়ে-পায়ে ভেঙে যাব
লক্ষযোজন মায়াসুরের পথ৷
নিঃস্তব্ধতা মহাশূন্যে ধরে রেখেছে চেয়ার-টেবিল
যেখানে সব কথাই কবিতা হয়ে ঝরে
আর সব ছোঁওয়া প্রেম৷
তুমি এসেছিলে একদিন পক্ষীরাজ হয়ে
শব্দহীন ঘুমের দেশে আমায় উড়িয়ে উড়িয়ে...
আমার এখনও মন ভরেনি৷
মানসী বিশ্বাস
সন্ধ্যে
চুপচাপ বসে থাকো
কিছুক্ষণ
কবিতা লিখতে লিখতে হাত ব্যথা হলে
চুমু দিও
সন্ধ্যেতে গঙ্গার ধারে বেড়িয়ে
খোলাচুল, ফুচকায় রাত কাটাবো
জেনেও
একমুঠো উড়ো সুখ বেঁধে রেখো বুকপকেটে
একদিন ছেড়ে দেবো জেনেও
চুপচাপ বসে থেকো
কিছুক্ষণ...!
আরে বাহ সেই
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ
মুছুনভাল লাগল প্রতিটি লেখা। সম্পাদকীয় যথাযথ।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ
মুছুন