চা পাতা * ৭৩
সম্পাদকীয়
কবিতার প্রান্ত কবিতার কেন্দ্র, কেউ আবার এই বিষয়গুলো একদমই মানেন না। তাঁরা মনে করেন যে যেখানে বসে লিখেছেন সেটাই তার কেন্দ্র। যে লিখছে তার কেন্দ্রবিন্দু সে নিজেই। কারো ঠিক করে দেওয়া মানচিত্রের কারনে কেউ কেন্দ্র বা প্রান্তের বাসিন্দা হতে পারে না। তবু ভৌগোলিক কারনে, উৎপাদিত সাহিত্য বিপননের সুবিধার্থে , আর খানিকটা ক্ষমতা ব্যবহারের কারনেও রাজধানীর কবিরা নাকি কেন্দ্রের কবি, অন্যরা প্রান্তের। নতুন লিখতে আসা কবিটি যখন এইসব প্রথমবার শোনে, একদম চুপ করে শোনে। বড্ড বালি পাথর আর চুনকাম চুনকাম হয় । এর থেকে দূরে থাকা অনেক ভালো। নির্জন, একা, তর্কহীনভবে.
কবিতা
চল্লিশের কবিতা
রাজদীপ ভট্টাচার্য
১
চল্লিশ পার হলে নদীর ওপার দেখা যায়। এতদিন সবার মুখের ঝাল খেয়ে যে ছবি উঠেছিল ক্যামেরায় আজ তাকে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যেতে দেখি চোখের উপর। মনে পড়ে নদীতে নামার আগে ভয় ছিল, রোমাঞ্চ। তারপর সাঁতার জীবন। জলের দাগ পড়ে গেল সারা গায়ে। বালি কাদা নুড়ির হুল্লোড়। অনেক ঘাটের জল। কলসীর ভিতরে আঁধার। কখনো ক্লান্তি এলে শুয়ে থাকে নিরামিষ চাঁদ। চেয়ে দেখি। হাজার আলোয় চোখে লাগায় ধাঁধা। তবু সব জল বড়ই তরল। বয়ে যায় ঢাল বেয়ে সমুদ্রের দিকে। টেনে নিয়ে যেতে চায় তার সাথে, সে বড় মায়া ! ছাড়াতে ছাড়াতে নামে রাত। প্রতি রাতে অন্ধকারে ভাত আমায় খায়, আমি গিলি ভাত।
২
আমার যৌনতা ছাড়া সবকিছু ছেড়ে গেছে আমাকে না বলেই ! অবশ্য আমিও রাখিনি কথা কারও, কথা রাখবার কথাও দিইনি কখনো। যা গেছে, যারা গেছে তার জন্য কোনো হাহুতাশ নেই কোথাও। আমি কোনও জিম্মাদার নই, মালখানার কোনও দায় মাথা পেতে নিইনি আমি । জাগতিক লাবণ্যের কিছুই নিজস্ব নয়। ফুৎকারে উড়ে যায় পৃথিবীর যাবতীয় দুর্মূল্য আসবাব। আমি কোন্ রক্ষকুলপতি রাখি তারে অন্তঃপুরে কলুষবিহীন !
অন্তর্বর্তী শূন্যতা
শুভদীপ সেনশর্মা
|
মনুষ্যত্বের বিদায়
অঙ্কুশ
তখন শহরের আকাশ মেঘলা,
হঠাৎ চিল- চিৎকারে একছুটে রাস্তায়;
দেখি, চোর ধরা পড়েছে।
শীর্ণকায়, কোটরে ঢুকে যাওয়া চোখ,
ধুলোমাখা জামা।
হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছে, হাঁটু গেড়ে;
কোলাহলে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।
ইতিউতি খোঁচা, কানমলা, থাপ্পড়ও।
এক আদিম উত্তেজনা চেপে ধরেছে ভিড়টাকে।
লাথি - ঘুষি আর বেল্টও চলছে এখন।
মুহূর্তে উপুড় হয়ে পড়ল শরীরটা,
রক্তমাখা, নিস্তেজ, পরাজিত।
বন্যসুখের উল্লাস থামেনি তবু।
নিদান এল ন্যাড়া করে দেবার।
শাস্তি শেষে অর্ধনগ্ন, ক্ষতবিক্ষত শরীরটা
হারিয়ে গেল সামনের গলির বাঁকে।
মেঘ সরিয়ে সূর্য ওঠেনি তখনও।
হঠাৎ এলে তুমি
সায়ন বক্স
রাতটা প্রায় অনেকই হল
তারারা গল্প করছে
সোনালী স্বপ্নগুলো বাড়ি চলে গেছে
চক্ষু-জলে আঁকা মেঠোপথ ধরে।
কত যে না বলা কথা রোজ খুন করেছি
গোলাপি ছুঁড়ি দিয়ে, হাতের স্পর্শটাও যে রয়ে গেল বাকি...
এসব আমার গোলাপি বাগানে বসে ভাবতে ভাবতে
একদিন
হঠাৎ তুমি এলে...
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই সম্পাদককে।
উত্তরমুছুন