ধারাবাহিক গদ্য




৩৬।

এই উপমহাদেশের অনেক গ্রন্থ পাঠ করে করে আমি পুষ্ট হয়েছি। সেই সব বইয়ের ভেতর দিয়ে যে গহিন এক জীবনবোধ,দর্শন ও সমাজভাবনার আলো আমাকে জাপতে ধরেছে তার থেকে আমি নিজেকেই খুঁজে নিয়েছি। খুঁজে পেয়েছি।নুতন হয়ে উঠেছি। তেমন কয়েকটি বইয়ের কথা এখানে বলেই ফেলি বরং। শহীদুল্লা কায়সারের সংসপ্তক, আবু ইশাকের সূর্য দীঘল বাড়ি,পদ্মার পলিদ্বীপ, সামসুদ্দিন আবুল কালামের কাশবনের কন্যা, ওয়ালীউল্লাহের লাল শালু , কাঁদো নদী কাঁদো, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন, মাদারডাঙ্গার কথা, উত্তরের খেপ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা, চিলেকোঠার সেপাই,পাপড়ি রহমানের পালাটিয়া, জাকির তালুকদারের পিতৃগণ, অমিয়ভূষণ মজুমদারের তাসিলার মেয়র, গড় শ্রীখন্ড, দুখিয়ার কুঠি,মধু সাঁধু খা, মহিষকুড়ার উপকথা, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অলীক মানুষ, অমর মিত্রের ধনপতির চর ,কিন্নর রায়ের মৃত্যুকুসুম, ভগীরথ মিশ্রের মৃগয়া, দেবেশ রায়ের তিস্তাপুরাণ, তিস্তাপারের বৃত্তান্ত, অভিজিত সেনের দেবাংশী, পিযুষ ভট্টাচার্যের তালপাতার ঠাকুমা, বিপুল দাসের ভুবনজোতের বাঘ এই কটি বইয়ের কথাই আপাতত লিখলাম।

এই সকল বই-এর ভুবনে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে এক অদ্ভুত শিহরণ আমাকে বিদ্ধ করেছে। দর্শন ও সমাজভাবনার স্তর প্রতিস্তরের মিশেলে শিল্পমাধ্যমের এক চিরায়ত দর্শন এভাবেই সমাজ ও দেশ কাল সময়ের বিস্তীর্ণ পরিসর হয়ে ওঠে। আমাদের ভাবায়। আমাদের ভেতর প্রশ্নের জন্ম দেয়। আমাদের জীবনের ওপর ঝুঁকে পড়তে শেখায়।

৩৭।

চিত্রকলায় আমি বিষ্ময় নিয়ে আবিষ্ট হয়ে পড়ি রে্মব্রান্ট,পল গগা,মাতিস,সালভাদোর দালি,পিকাসোর ছবির বর্ণময়তার ভিতর।নানা রঙের জীবন।নানা রঙের মায়া।কি এক তীব্র দর্শনের অভিঘাত।জীবন নাড়িয়ে দেয়।

পাশাপাশী আমি যখন তানভীর মোকাম্মেলের চলচিত্র ‘নদীর নাম মধুমতি’, ‘চিত্রা নদীর পারে’, ‘লালন’ কিংবা ‘হাসন রাজা’ দেখি তখন তানভীরের দর্শনচিন্তা ও সমাজভাবনার বহুরৈখিকতা আমাকে একটা সদ্য জেগে ওঠা ভোরের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।আমি আলো মাখি।আমি জীবন মাখি।

শিল্পের দর্শন ও সমাজভাবনা,অনন্ত স্বর ও প্রতিস্বর নিয়ে এভাবেই ঘুরে ঘুরে সময়পরবের ভেতর কি তীব্র ঢুকে পড়তে থাকে!


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১