চা পাতা। ৬৪

                     চা পাতা 
             ২য় বর্ষ ।। সংখ্যা - ৬৪




                      সম্পাদকীয়

রোজ বৃষ্টি হচ্ছে । মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছে । অবিরাম তিন চার ঘন্টা হওয়ার পর কিছুক্ষণ থেমে পুনরায় শুরু হচ্ছে । এটাই ডুয়ার্সের চরিত্র । পুকুর খানাখন্দ ভরে গিয়ে থইথই অবস্থা । কালজানি তোর্ষা ফুঁসে উঠছে । অথচ পরিসংখ্যান বলছে উত্তরের বৃষ্টিচিত্র কমে আসছে । এবারের বৃষ্টিটা নতুন আশার সঞ্চার করছে । আসুন সবাই মিলে আরেকটু প্রকৃতির প্রকৃতির প্রতি যত্নবান হই । প্রকৃতির বিরোধিতাই হয়তো পাপ ।









শু ভ দী প  আ ই চ

বিস্ফোরণ অথবা বিস্মরণ

বোমার মত ভেঙে পড়ছে বোধ
ড্রেন থেকে গড়িয়ে  নাভি
হেঁটে হেঁটে চোখ
চুলগুলো মিশে  জঙ্গলে

প্রকান্ড এগিয়ে এলে
আকাশ বড় ছোট্ট নিরাময়

এছাড়া আমাদের কোন রোগ নেই

কিলোমিটার চটকে মেখে নিয়েছি খিদে
পেটের মধ্যে মরে গেছে জন্ম
একটা ঐরাবত একটা মানুষ
 
-------------------------------------------------------------------


প হে লী  দে

ব্রেইলভূম


সম্পর্কের নিচে পড়ে
বৃক্ষটি ছায়া বিলোতে বিলোতে অঙ্গার হলো
পাললিক একটি নদী রোজ ছুঁয়ে দেয় শিকড়
তবু জ্বলে থাকে পিপাসা
চোখের কোণে ভ্রুর ভাঁজে,

পোড়ামাটির অবয়বে ফোটে মাছের চোখ
সিলগালা করে নিয়ে যায় প্রবঞ্চক শহর
দূরে গোটা কতক টিলার ব্যবধানে শোনা যায়
উলঙ্গ বেদনার শোরগোল ।
হয়তো কোন অনাথ কৈশোর ঝড়ে পড়েছে
কদমের মগডাল হতে
অথবা ভিন্নবাসী যুবতী
শূন্যতা ভর্তি পেয়ালা প্রসারিত করেছে
নির্বাক অরণ্যে।
টাটকা রোদ
ব্যবচ্ছেদ করে রক্তজবার জীবাশ্ম
গ্লানির দেয়াল উগরে দেয় নির্মোহ হৃদয়,
যেখা‌নে আত্মজ অন্ধকার ছাড়া
বাসযোগ্য কোনো ব্রেইলভূম নেই।


------------------------------------------------------------


মৌ মি তা পা ল 

হ্লাদিনী  (কিস্তি -১)


              ডুবটিপ কপালে  নিয়ে  মেয়েটা জল তুলতে গিয়েছিল সূর্যশোকের ঘাটে। যমুনার ঝুপজলে ডুরে লাল শাড়ি অপেক্ষায় তিরতির কাঁপছিল ।আজ কালো ছেলেটা আয়ানের আড়ালে ওর কপালে চুমু খেতে চেয়েছিল।এসব আবেগ সওয়া যায় না। বয়সে ছোট হলেও  ছেলেটার জেদি আদরের কাছে হার মেনেছিল মন। আজ একশো চার রাত হল আয়ান ওর শরীর ছোঁয়নি। ছোঁয়ার কোন ইচ্ছেও আয়ানের নেই।শরীরে আগ্রহ নেই আয়ানের।শরীরে  পুরুষ  নয় বলে,নাকি অতীতের কারোর জন্য  তাকে ফিরেও দেখে না,তা আজও  বোঝেনি সে।শরীর  আর মনের ফাঁকা ফাটলগুলো বুজিয়ে দিতে আরো বেশি করে কাজ করে মেয়েটা। কেমন যেন ঘোরে জীবনটা চলছে । আজ মাঝনদী অব্দি একলাই  যাবে সে দুধ দই বেচার ছলে।কালো ছেলেটাকে খুঁজতেই হবে তাকে।      
                                     
          রোদচুমুক আলো হৃদির বুক চুয়ে নামছিল।নরমভোরের একলা বিছানায় এলো চুলে শুয়েছিল মেয়েটা।গতকাল  নৌকার ছইয়ের আড়ালে অনেকটা সময় পার  করেও ঘরের পথে পা ফিরতে চায়নি।তাই সন্ধ্যা ছুঁয়ে এসেছে গতরাত।শাশুড়ির বকুনিকে পাত্তা না দিয়ে  দেখছিল পাশের ঘরে আয়ান মন দিয়ে  কিছু নিয়ে ব্যস্ত ।হৃদির শরীর মন আদর চায়।কিন্তু  ওর শরীর বা মন কোনটাই খুলে পড়বার ইচ্ছে  আয়ানের নেই।ওর মনে কে বা কি আছে আজ আর সত্যি জানতেও মন চায় না।কতটা ঘা খেলে বেয়াদপ মন কানুকে ভালবাসে,যার কিনা একশ বা তার বেশি গোপিনী ।গতকাল  রাতে হৃদি নিজেই নিজের  শরীর নিয়ে  খেলেছে। এলোমেলো মনটাকে জড়ো করে আজ আগে চুলে ভরে নিল ধুনোর গন্ধ ।চন্দন স্নান শেষে মুখে দিল বড়াই এর পান।আজ তাম্বুলস্বাদের চুমু দেবেই কালো ছেলেটাকে ।চুলে হাতখোপা করে রাঁধতে বসল।আজ রাতশেষে আদরের অভিসার। আজ তাম্বুলস্বাদের চুমু দেবেই কালো ছেলেটাকে । চুলে হাতখোপা করে রাঁধতে বসল। আজ রাতশেষে আদরের অভিসার।

        আজ মাথায় বুনোপ্রেম ভর করেছিল সকাল থেকে। সকাল  থেকে দাঁতে দানাটুকু কাটেনি হৃদি। উপোষী মনের তুলনায় এ শরীরের উপোষ তেমন কিছু নয়। সাঁঝ নামতেই এলোমেলো গোটা দিনটাকে গুছিয়ে  নিতে শুরু করল সে। পায়ের নূপুর খুলে রাখল। বোবা সময়ে এ আওয়াজ বেমানান । চুপপ্রেমে কোন শব্দ থাকতে নেই। আঁটো করে বাঁধল কাঁচুলি। আজ সঘন নিঃশ্বাস। কোমরে নাভির নীচে বাঁধল ফুলের হার। কেতকী কদম হাতে পিষে আসলে ছুঁতে চাইল কালো ছেলেটাকেই। রাত আরও ঘন হোক। আঁধারেই প্রেম সোজাসাপ্টাভাবে বাঁচে। কানে তীব্রভাবে  ভেসে আসছে। চোখের সামনেই যেন বাঁশি হাতে কানু।পাগল লাগে নিজেকে এসব সময়ে । প্রেম নাকি ভালবাসা  তা সে যাই হোক আজ সে পাগলিনী। ভালবাসা  দিতে জানে  শুধু। হৃদি চলেছে অভিসারে।

------------------------------------------------------------

নী লা দ্রি  দে ব

রাতের রেওয়াজ বা অমূলক কবিতা- পনেরো


একটা হা মুখের ভেতর
       ঢুকে যাচ্ছে আমাদের ভূগোল
চারপাশে হল্লা পার্টি
শিকারের নেশায় মেতেছে শাসক
অণুজীব বিষয়ক সেমিনার আসলে বিরতিপর্ব
দুটো বিরতির মাঝে ডুবে যাবার আগে
          আপনি হয়তো কাটশট গুছিয়ে নিচ্ছেন

সচেতনতা এখনও একটি অন্ধবিশ্বাস



                          চা পাতা সাপ্তাহিক ব্লগজিন 
                               সম্পাদক- তাপস দাস
                       Email- tapsds00@gmai.con  

------------------------------------------------------------

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১