ধারাবাহিক গদ্য





২৪।

প্রাত্যহিকতায় দৈনন্দিনে ভোরের ভেতর জেগে উঠতে চাওয়া ভোরগুলির ভাঁজে ভাঁজে কেমনতর দেহতত্ব এসে পড়ে।তখন ফজরের নামাজ ভাঙে মোল্লাবাড়ির মসজিদে।জামাতের জমায়েত ভেঙে গেলে ভাঙা জমায়েতের টুকরোগুলির বিভ্রম থেকে ভ্রমবশত ভ্রামণিক লোকজতা বিনির্মিত হতে থাকে।কবেকার আভিজাত্য বনেদীয়ানা প্রাচীনতা নিয়ে মোল্লাবাড়ি যেন তার প্রবীণত্বকেই প্রতিধ্বনি ধ্বনির আবর্তে টেনে আনে।তামাকের হাট বল পাটাহাট বল গরুহাটি বল সব সবকিছুকেই মোল্লাবাড়ির চৌহদ্দীতে এনে ফেলতে হয়।কথিত আছে সেই কবেকার ওয়াহাবী ফরাজী খিলাফতের দিনগুলিতে মোল্লাবাড়ির রুকনুদ্দিন জয়নাব ইলিয়াস মইনুদ্দিনেরা দুধসফেদ ঘোড়া ছুটিয়ে চলে যেতেন দিকদিগন্তের পানে।মোল্লাবাড়ির ফরিদা ফুপু আঞ্জুমা নানীর ‘বিয়ের গীতের’ নিজস্ব দল ছিল যার কথা ৫০/৭০ মেইল ব্যাসার্ধের গ্রামগুলির পুরোন নতুন মানুষেরা প্রায় সকলেই জানে।

২৫।

জানা অজানার পর্ব পর্বান্তর পেরিয়ে যেতে যেতে পটভূমির ভিতর মোল্লাবাড়ি ঢুকে পড়তে চায়;ঢুকে পড়ার পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ প্রামান্যতা উপযোগী কিনা সেটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে যখন মোল্লাবাড়িই প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতজনের এক পটভূমি হয়ে উঠতে থাকে।পটভূমি কি স্থিরচিত্র হয়ে পটভূমির ভিতর বসে থাকতে পারে!বসবাস করলেই কিংবা বসতি বসালেই তো আর হবে না;তাকে চলমানতা দিতে হবে।হাটবাজারের ব্যাস্ততাও;লোকাচার লোকবৃত্ত কাঁথাসেলাইয়ের দিনগুলি বসতির প্রান্তিক রেখার স্পর্শযোগ্যতা স্বত্বেও স্পর্শযোগ্য মনে না করবার দ্বিধা দোলাচলে ভিন্নমুখি পটভূমির কথাই পটভূমির নতুন জেগে ওঠা অংশরূপে বিবেচ্য বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে থাকে;গড়ানো বেলার আকাশের গুটিয়ে নেয়া আলোর নিঃসঙ্গতায় জল জলা জনভূমির বিষাদের মহাশুণ্যতায় বিলীয়মান সামগ্রিকতাটা লুপ্ত হতে হতে বিলুপ্তির সান্নিধ্যটুকু বেলা-অবেলার দিনবদলের ধরতাইটুকুই জাগিয়ে রাখতে চায়।জাগৃতির প্রাণময়তায় জলে ভাসা নুড়িপাথরের মতো চিরকালের সত্যিকথন হয়ে মোল্লাবাড়ি নামাজ জামাতের বহুস্বরিকতায় জেগে থাকে তীব্র এক জমায়েত হয়ে।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১