পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ধারাবাহিক আত্মজীবনী। সুবীর সরকার

ছবি
১৯। চিলাপাতার হাটে ঢোল বাজাতে বাজাতে আমার নিকটবর্তী হয়েছিল জার্মান রাভা।আন্দুবস্তীতে হাড়িয়া খেতে খেতে কত কত বছর আগে জার্মান তার জীবনের নানাকিসিমের গল্প শুনিয়েছিল।কত কত বাদ্যগান মোরগলড়াই কবরখানা ধামসা মাদল!এক ফাঁকে জেনেছিলাম শিবজির বৃত্তান্ত,যাকে গিলে ফেলেছিল মেন্দাবাড়ির হাতি।মাঠে মাঠে ঘুরি।ছড়ানো রোদের মায়ায় ভরভরন্ত শীতকাল।নকসাদার।অপরূপ।প্রান্তিক সব গঞ্জবাজারে উত্তরজনপদের,নিম্ন অসমের নদীজলবাতাসে পুষ্ট হতে হতে কেমন এক চিরকালিনতাই এসে যায় বুঝি।কত সম্পর্ক।বর্ণময় এক জীবনই তো যাপন করি। অসমের গৌরীপুর।সাদা ফিতের এক নদি গদাধর।লাওখাওয়ার বিল।৩০০ বলির দূর্গাপূজা।রাজা প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়া।রাজকুমার প্রমথেশ।লালজি রাজার গল্পগাথা।আর হস্তির কন্যা প্রতিমা বড়ুয়া।জনশ্রুতিতে ‘আজার বেটি’।গৌরীপুরের পথে পথে হাঁটি।পাগলের মত হাতি খুঁজি।সেই সব মাহুতফান্দীদের খুঁজি।আমার শরীর জুড়ে গোয়ালপারিয়া লোকগান।কাঠি ঢোল।মায়াময় এক জীবন নিয়ে আমার গতজন্মের ‘মাটিয়াবাগ রাজবাড়ি’।বিমল মালির বাজনা বাজে,বাজে সীতানন্দের সারিন্দা।প্রতিমা বড়ুয়ার গানের সুরে সুরে আমার আবহমানের অনুভুতিময় স্মৃতিকাতর কুয়াশাঘেরা জীবনের দিনগুলি জীবন্ত হয়ে

চা পাতা। ৫৭

ছবি
  কবিতা কিছু দেয় না। তবু অনেক কিছু দেয়। কবিতা ঔষধের পাশে বিশ্বাস হয়ে বসে থাকে। ভরসা জোগায়। এই সময়টুকু আমরা পেড়িয়ে যেতে পারব কবিতাকে সাথি করে। অসুস্থ মানুষের মুখে লেপে দিতে কবিতার সৌন্দর্য । সবাই ভালো থাকুন। সেরে ওঠো প্রিয় পৃথিবী।              --------------------কবিতা------------------------- দুটি কবিতা * অঞ্জন দাস  পুরুষ নদী   রং ছবিতে কুঁড়ির ভেতর ফুল আঁকোনি গানের ভেতর মন লেখোনি গায়ক পাখি ভাত পড়েছি খিদের ভেতর রাত পড়িনি কেউ ফেরেনা ফিরেই যদি চিনতে পারো   ফিরেই যদি চিনতে পারো কেউ ফেরেনি কেয়ার বিহিন বছর কুড়ি সেই রয়েছে যার অহমে  পুড়িয়ে ছিলে পুরুষ নদী  শ্রেষ্ঠ দেহের আগুন নেশায় চাইবে তাকে শরীর  বিহীন দাও কী পাথর কাতর বাঁশি বন ভুলিয়া খাঁচা পাখির প্রেম শিখে যাই ত্যাগের ভারত শক্তিশেলে সিতা'ই জানি   রং ছবিতে কুঁড়ির ভেতর ফুল আঁকোনি লালন ফিরবে বাড়ি     জানালায় মুখশুদ্ধি ভেঙে পড়ে গাছের বাতাস  সন্ধ্যা খুলে  জলগান  ঈশ্বরী  গায় পলায়ন  কবিতার  হেও থাক কাঁচের চুড়িতে  ভাঙা চুড়ি  প্রতিবার কবিতা শোনায় মৃত কবিতার চারা ভেঙে দিও শ্মশানের গায়ে লালন

ধারাবাহিক আত্মজীবনী।। সুবীর সরকার

ছবি
১৭। কুয়াশায় হিম হয়ে থাকা বিশাল একটা মাঠ।সাদা পর্দা ঝুলছে।শীতের এক ম্যাজিক আছে।কুয়াশায় খোলা মাঠে দেখতে পাই সার্কাসতাঁবু।তাঁবু ঘিরে আলোর বন্যা।বাজনা বাজে।কনসার্ট হয়।অতিকায় জিপ লাফিয়ে পড়লেই হো হো হাসির সব জোকারেরা।এদিকে ট্রাপিজের খেলা।নেটফড়িঙ্গের মত লাফিয়ে পড়া খেলুড়েরা।ঘোড়াগুলি ছুটতে শুরু করে একযোগে।সার্কাস আমার প্রিয় অনুসঙ্গ।সার্কাস মানেই একটা জায়মানতা।বিস্তার হারানো নদীর উপাখ্যান শুনতে বসে যাওয়া। সমস্ত জীবন শীতকাল মানেই জানতাম বুঝতাম সার্কাস আসছে।আমাদের প্রান্তিক শহরে।শিশিরের শব্দের সাথে মিশে যেত বাল্যকালে ডোরাকাটা হলুদ বাঘের হুংকার যা ছড়িয়ে পড়তো সারা শহরে।শরীরে শিহরণ জাগতো।দিনের আলোর ভেতর ঘুরে বেড়াতো ‘নটরাজ সার্কাসে’র সেই সব বাচ্চা হাতির দল।আমরা হাততালি দিতাম। সার্কাসের ট্রান্সে জড়িয়ে জড়িয়েই কিভাবে বড়বেলায় চলে এলাম!বাঘ হাতি সব উধাও হল।কিন্তু সার্কাস থেকে গেলো।সার্কাসসুন্দরীদের মোমের মতন আঙুলে পিছলে যেতে থাকলো হেমন্তশীতের নরম আলো।এভাবে মায়া এলো।সুপুরিবনের ভেতর কারা বুঝি বিছিয়ে রেখে গেলো মস্ত একটা গানবাড়ি। ১৮। অনেক বছর পরে ‘আকন্দ সার্কাসে’র জোকার জিয়ারুলের সাথে সখ্যতা জমেছি

চা পাতা।। ৫৬

ছবি
চা পাতা। ২য় বর্ষ । সংখ্যা- ৫৬  সম্পাদকীয়    এই বেঁচে থাকার চেয়ে সুন্দর কিছু নেই । তাই এই তীব্র অসুখের মধ্যেও আমরা লিখছি, গান গাইছি, কবিতা পড়ছি। এটাও এক লড়াই।  চলুন ভালো থাকি।    মনোজ পাইন ধ্রুব পত্র অনেক স্মৃতিতে ভরপুর হৃদয়, তবুও মেঘ পরিপাটি বারান্দায়। আমি আন্দাজ মতো বেঁচে আছি। আগত বিপর্যয়ের স্বপ্ন, ভীতি আমাকে প্রতিদিন চেটেপুটে খায়। প্রান্তিক জীবন এখন পুরোপুরি নগর জীবনে ছেয়ে আছে। স্মৃতি তো এখন ফেলে আসা গ্রাম, যার উৎপাদনে বার্ধক্য  বসেছে। জানো, অদ্ভুত নিয়মে আমি আবিষ্কার করেছি যে প্রেমে আমি নিজেকে এত কাঙাল ভাবি ;      সে জীবন আমার থেকে দূর, বহুদূর। জেনে রাখো, যে স্বপ্ন, যে ভয়ে আমি ঘুমোতে পারিনি সেখানেই আমার দুঃখিনী কুড়েঘর প্রতিদিন আশার প্রদীপ জ্বেলে যায়!  মনে রাখো, ধ্রুব শব্দে আমার নিয়ত প্রীতি ঘৃণা শব্দ আমার থেকে যথারীতি দূর!                             স্মৃতিজিৎ কিছু মানুষ       আমার মস্তিষ্কে মৌরলা মাছের স্বাধীন সাঁতার ছিল ধ্যানে ছিল ক্যাকটাসের শেকড় শিশুর মত বিশ্বাস নিয়ে খুঁজেছি দেশ এবং মানুষের সমানুপাতিক সম্পর্ক আজ সাঁতারে