চা পাতা।। ৫৫



স ম্পা দ কী য় 

   দূরে থাকুন । দূরে থেকেও সবচেয়ে কাছের মানুষ হওয়া যায়। 

  বসন্তের সব উচ্ছাস মুছে যাচ্ছে অসহায়তায়।  কোকিলের গান সাইরেনের মতো বেজে কোথাও কোথাও।

  



  



সুবীর সরকার

সুগন্ধ

মরা আলো । সুগন্ধের স্মৃতি ফিরে এল।
মহাসড়ক কে পাশ কাটালেই 
                                    শূন্যতা
মাঠে মাঠে বিছিয়ে রাখা দুপুর।
তুমি নুপূর খুলছো আর ঢুকে পড়ছো 
                                    লেবুক্ষেতের হাওয়ায়






মৌমিতা পাল

মনাস্ট্রি কলিং - ১১ 

পাহাড়ের ওপর আগুন পেয়েছিল পথিক!

পুড়ে ছাড়খার স্মৃতির রাস্তা,
মার্জনা চাইছিল নিঃশ্বাস 

সন্ধেতে ভেসে আসছিল যেসব সুঘ্রাণ 
সেসবই প্রত্যাখ্যান করছিল ন্যাকা বিরহ
ধৈর্য ধৈর্য বলে বেছে নিয়েছিল দিলখুশ ফক্কা

ডঃ সাহেব , বাঁচালে বাঁচিয়ে নিস
চোখের জল গিলে নিয়েছিল বলেই
'ভালো নেই ' এটুকু বলতে শেখেনি কবি।

ভালো যে ছিল সে থাক

মনে হবে কবি আর পথিকের
        কখনো কোন ভাব ছিল না
মনে হবে 
  পথিক একমাত্র আগুনেরই মন কাড়তে চায়
মনে হবে 
         না থাক , কিছু মনে না হওয়াই ভালো।

কী যন্ত্রণা জানতে চাস না ডঃ সাহেব
কাল রাতে জেনেছি কবি ভালো নেই।
ফ্লাইট মিস করে হলেও
         কবিকে বাঁচিয়ে দিস এবারেও...






নীলাদ্রি দেব 

অন্য চৈত্রের কবিতা 

ছয়. 

কোথাও কোন আর্টপেপারে ফুল 
হারমোনিয়ামের আলোগুলোও ভীষণরকম মৃদু  

তবু জল থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে নিচ্ছে শালুক গাছ


সাত. 

দূরত্ব কমে এলে ছায়া আরও স্পষ্ট হয়ে আসে 
চৈত্র কাছে এলে... ঝড় 

আট. 

একটি শুকনো মেঝে 
      মা মুছে মুছে আমাদের করে তুলেছিল 
আলোর আঘাত জমতে জমতে মেঘ 
মেঘের আঁচলে পিছলে যায় সময় 

ক্ষত আমরা সবাই মেনে নিলেও 

এখনও যতিচিহ্ন শিখিনি

নয়. 

- পদ্মপাতা এত ঘন হয় কি? 
  ছোট কোন শালুক গাছের বন 
  পাতার গায়ে ঝুরো ফুলের রেণু 
- মৌমাছির পায়ের কাছে মধুর বিজ্ঞাপন 

গোলপুকুরের ঘাটগুলো 

        নিজেদের খুব কাছেই চলে আসছে

দশ. 

এমন একটা পথ 
সোজা 
আরও সোজা হতে কি পারত? 

উঠোন ভর্তি রোদ 


রোদ খুঁজছি




অক্ষমালী

যাত্রা
    

নীল নাইট ল্যাম্পের বিষে তোমাকে দেখছি।

দেখছি কী মহার্ঘ্য তোমার বল্কল!

তোমার নাকের পাটায় গয়না বড়ির মতো ধুনোরঙা ঘাম জমেছে,
যেন কাবুলি আঙুরের থোকা,
ঝুলে আছে একে অপরের ঈর্ষায়,
পাছে গড়িয়ে নামে কেউ একটু আগে, 
বা পুচ্ছ ভর করে কাউকে উবে যেতে হয়...

চিবুকে সেই সুপক্ক খেঁজুর স্বাদের তিল__
এ আলোতে যদিও ওকে উনুনের ঝিকের মতোই কালো লাগছে,
আসলে ও ভোরের জবার মতোই টকটকে লাল,
কতবার হাঁটুগেড়ে প্রার্থণা করেছি ও মূল একটু ছোঁওয়ার__
আর প্রতিবারই তাকে তুমি বাম হাতের মধ্যমায়
পরখ করে বলেছো- 
          এখনো পুরুষ্ট হয়নি যে...
চাঁদি ফাটা তৃষ্ণায় নিজের জিহ্বা লেহনে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আমাকে ততবারই__

তোমার স্বচ্ছ রাত পোশাকের আদরে শিহরিত
         টলটলে অমৃতভান্ডের চূড়া, 
         গোধুলী রঙা নাভিমূল,
         সবুজ রঙা গভীর তিস্তার হাতছানি,
                     সব, সব দেখছি আমি সিগন্যাল ভাঙা বাইকারের মতোই।

আজ আমি বেলাগাম, বেহিসেবী, বেইমান...

ভোর না হতেই ওরা যে তোমাকে নিয়ে যাবে সেই অমেয় দূরত্বে
          যেখানে বহুযুগ আগে আমরা একসাথে 
          দোলনা চড়তাম, হলুদ ফড়িং ধরতাম,

          আর হেমন্ত রোদে পিঠ দিয়ে গল্প করতাম তারও বহুযুগ আগের এক অঝোর শ্রাবণী পুর্ণিমা রাতের...




তাপসী লাহা

দেবী

কি এক প্রবল অরণ্য নিয়ে জন্ম

পাতাধোয়া স্বপ্নের গায়ে সবজে ছাঁপ

 কারো নিপুণ হাতের কারুরাজি

ঘন বসন্ত এসে বলে গেছে,   তুমিই প্রথম সেই

 অনাবিল        মুক্তধারা,     সৃষ্টিমগ্ন সূর্যের

 তেজস গরিমায়  হলকায়িত  আরক্তিম  
  সমুদ্রসম্বল,
  মহয়া ধরা

  নিবিষ্টতার একাগ্র স্থাপন

      সংসার সংসার খেলার ছলে বজ্রনির্ঘোষ        বদান্যতায়

 পালটে ফেলবে লক্ষীঠাকুরনের পায়ের ছাপ,

   রুইবে ধান,   শৈশব চারায় চারায়
 বনাঞ্চল

আলুলায়িত কেশ মুঠো করে চূড়া সাঁজে

গঙ্গার  ধারক হয়ে শিবকে ছুঁড়ে দেবে বাতিলের খাতায়।

গঞ্জিকাসেবী সে ভবঘুরে শুধু জানে বুকের না নেভা দাবানল,

শোক তাকে ছিঁড়ে খেয়েছে,কন্ঠ ছুঁয়ে হলাহল

অশ্রুধারায় অন্ধ হয়েছে দৃষ্টি, শতছিন্ন বল্কল

 আঘাতের স্থান থেকে ধ্বংসবীজেরা জন্মালো অগণন
   

ক্রোধের আখ্যানে বিষিয়ে দিলো স্রষ্টার দূর্বল কান

 অসহায় আর্তির কাতরতর ডাকে
 ফিরে  আসে    আদিগর্ভা

   সৃষ্টির করুণধারায় সিক্ত করাতে

      আজ   দেবীর বোধন


ক্ষমতার আধানে আদিশক্তির পুনর্বাহন।






রেক্সোনা পারভীন

মায়ের স্পর্শ

সেদিন আমার ভীষন জ্বর।
আমার শহর পুড়ে যাচ্ছে যন্ত্রণায়,
সেই যন্ত্রণা কমাতে কেউ আসেনি,
এসেছিলে তুমি।
যখন শারীরিক তাপে ক্ষয়ে যাচ্ছি আমি -
তোমার আঙুল,
আমার কপাল স্পর্শ করতেই,
পেলাম যন্ত্রণা থেকে রেহাই।
জানো মা,আজ ও ভীষন জ্বর-
হু হ্ন করে পুড়ে যাচ্ছে আমার শহর।
আমার হৃদয় খুঁজছে তোমার সেই আঙ্গুলের স্পর্শ
আমি যে তোমার আঁচলেই খুঁজে পেতাম বেঁচে থাকার রসদ।
সত্যিই মা তুমি অনন্য,, অসমতুল্য।


--------------------------------------------------------
চা পাতা সাপ্তাহিক ব্লগজিন
সম্পাদক - তাপস দাস
 email- tapsds00@gmail.com    





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১