ধারাবাহিক আত্মজীবনী।। কবি সুবীর সরকার




১৩.
কত রকমের লেখাই তো লিখে গেলাম জনমভর।প্রায় ৩৪ বছর ধরে। ফিচার, গদ্য, বুলেটিন, ডায়েরি। কিন্তু যাই লিখি না কেন, যাই লিখে গেলাম সবকিছু পেরিয়ে আজ এটাই বুঝি আদতে আমি জনমভর কেবল কবিতাই লিখে গেলাম। একটি দীর্ঘ কবিতাই লিখে চলেছি যা আজও শেষ হয়নি। আচ্ছা, সত্যি এমন কোন সংশয় কি জাগেনি কিংবা এমন কোন প্রশ্ন তৈরি হয়নি কি, সেইসকল প্রশ্ন কি তাড়া করে বেড়ায় নি আমাকে; যে কেন কবিতা লিখি!কেনই বা কবিতা লিখবার এক জীবন কুয়াশার সফেন সমুদ্রে ডুবিয়ে মারলো আমাকে!

কেন কবিতা লিখি তার কোন সোজাসাপটা জবাব নেই।আমি অন্তত খুঁজে পাইনি। পাইনা। এটাই বুঝি, মানুষ যেভাবে গল্পের পাকে পাকে জড়িয়ে যায় ঠিক সেভাবেই আমাকে জড়িয়ে যেতে হয়েছে কবিতার তীব্র এক পাকে পাকে। অভিশপ্ত আমি । এই জীবনে আর কবিতা থেকে পরিত্রাণ নেই আমার।এই নিয়তি আমি মেনেও নিয়েছি।আমার তুমুল আনন্দ হয়েছে এই কবিতার যাপনের জন্য।মরণঅবধি তাই কবিতাই তো লিখে যাবো।এটা চিরসত্যের মতো, না ফুরোন লোকসংগীতের মতো।অমোঘ। চিরন্তন।



১৪.
কি লিখি কবিতায় ! কেন লিখি কবিতা!আসলে তো আমি কবিতায় জন্ম লিখি, জন্মান্তর লিখি। আমি যে জীবন দেখি, যে জীবন যাপন করি,আমার সব ও সমস্ত দেখাগুলিকে আমার জীবনের গায়ে ঢলে পড়তে দেখলে আমার কি যেন হয় ! মাইল মাইল হেমন্ত-শীতের নদীচর অতিক্রম করতে করতে,অজস্র পাখিদের উড়ে যাওয়ার চিরকালীনতায় আমি দেখি কি এক ভুবনমায়ার আলো!আলো কমে আসা জনপদে গাছের মাথা থেকে সরে যাওয়া রোদ আমাকে এক আবেশের আশ্রয়েই নিয়ে গেলে আমি দেখি কোথা থেকে কি এক ঘোর এসে আমাকে সম্মোহিত করছে।আমি গুলমাখোলার জঙ্গলে হাতি,হাট ও হাড়িয়ার কাছাকাছি খুব পৌছতে থাকি।কিন্তু পৌছনো কি শেষপর্যন্ত আর হয়!জীবনের ভেতর কি অসম্ভব এক মায়া!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১