আমার কবিতাজীবন : নদীর জলে কান্না মিশে যাওয়ার এক জীবন   

৯.

তখন নবম শ্রেণীর ছাত্র।রোগাপাতলা আমি একটা ভাঙা সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াই শহর,শহরপ্রান্ত,গঞ্জে।কাঁধের ঝোলায় জীবনানন্দ,ভাষ্কর, আল মাহমুদ,শামসের আনোয়ার,অরুনেশ থরে থরে সাজানো।খোলা মাঠে,সোনালি হেমন্তের রূপমায়ার ভেতর আমার সাইকেল ঢুকে পড়ে।আমি নরম রোদে বসে কবিতার বই পড়ে ফেলতে থাকি।জীবনানন্দের বোধ এক ঘোর বিছিয়ে দেয়।অন্তহীন এক স্বপ্নের বুদবুদ আমার দিকে ধেয়ে আসতে থাকে।আমি কবিতার কাছ থেকে উপহার পাই এক অভিশপ্ত ও ভুতগ্রস্থ  জীবন।এরপর কিছুটা সময় পেরিয়ে শুরু করি বিশ্ব কবিতায় বিচরণ।নিজেও লিখতে শুরু করি।জেলায় জেলায় নুতন বন্ধুদের সাথে শুরু হয় চিঠির পর চিঠির আড্ডা।কত স্বপ্নের কথা জুড়ে থাকতো সেই সব চিঠিপত্র জুড়ে।এভাবেই নিজেকে নির্মাণ আর বিনির্মাণের টানেল ঢুকিয়ে দিতে থাকি।

১০.
চারপাশের সমস্ত অসুখ,সমস্ত অস্থিরতা,সমস্ত কালো সবসময় আমাকে নাড়া দেয়,নাড়িয়ে দেয়। বিচলিত করে তোলে। সে 1986 কিংবা 2020 হোক। মানুষের অসহায়তা,বিপন্নতা,দেশকালের যাবতীয় কালো কেমন অসহায় করে তোলে। কিন্তু কি আর করতে পারি আমরা। বড় ক্ষুদ্র আমরা। শক্তিহীন। কলম ছাড়া আর তো কোন সম্বল নেই। তাই লিখি-

দেশ
সুবীর সরকার

হাতির শুঁড়ের মত আমাদের জড়িয়ে ধরেছে
                                          আমার দেশ
চারদিকে কালো পাখি।সাদা ডানায় মিশে থাকা
                                                       রক্ত।
ভয় তাড়া করে।
আর্তনাদ অনুবাদ করতে বসি
                                     ভরসন্ধেবেলায়
দেশ মানে কি তবে হিমঘর!
সাজঘরে ঢুকে পড়া ক্ষিপ্র
                                    কুঠার

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১