আমার কবিতাজীবন : নদীতে মিশে যাওয়া কান্নার জীবন
৭.
অনেক অনেক বছর আগে একটা সাহিত্যের আসরে গিয়েছিলাম তরাইএর এক শান্ত জনপদে।সেখানে পরিচয় হয়েছিল রণেন বাবু,কল্যাণ দে, নৃপেন বর্মণ দের সাথে।তখন সদ্য লিখতে এসেছি।পরিচয় ও বিনিময় হচ্ছে কত কবি,সাহিত্যিকের সাথে।কত ছোট পত্রিকার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠবার পর্ব তখন।নৃপেন বর্মনের সাথে পরদিন চলে যাই ওর গ্রামের বাড়ি।নৃপেন আমার বন্ধু হয়ে ওঠে।নৃপেনের বাসা ভর্তি বই এর পত্রিকার সবিপুল সমাবেশ।সারা বাংলা ভাষায় কত তরুণের বই পেলাম সেখানে।জানতে পারলাম।নৃপেনের সঙ্গ আমার স্বপ্ন ও ক্ষিধেকে উস্কে দিল।আমি বাংলা কবিতার ভেতর খুব ঢুকে পড়তে থাকলাম গুড়ি মেরে।নৃপেন ঘুরিয়ে আনলো টুকুরিয়ার জঙ্গল।আমাকে শোনাতে থাকলো কানু সান্যাল ও জঙ্গল সাঁওতালদের গল্প।
৮.
'সুপুরিগাছের মাথা থেকে সরে যাওয়া রোদ
আমার প্রেমিকা'
পৃথিবীতে কত মানুষের ডাকনাম নেই।
আমার কান্না দেখে ফেলে পুকুরের হাঁস
অথচ ভাঙা বিষদাঁত নিয়েই বেঁচে থাকে কত
মানুষ
আমি সর্বাঙ্গে পাপ মাখি।
বালুচরে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের দাগ ছুঁয়ে
উড়তে থাকা জোড়া শালিক
জীবন বদলে দিল অভিমান।
আগুন নিভিয়ে জেগে থাকি হাহাকারের
ভেতর
শহরে বেড়াতে আসা কচ্ছপ।
চশমার কাঁচে জল জমলে আর তো কান্না
লুকোনো যায় না
আমি পালিয়ে যাওয়া নাবিক
আমি মাহুত হারিয়ে ফেলা মাকনা
হাতি
একা হতে হতে কতদূর যেতে পারে মানুষ!
আমাকে ঘিরে অন্ধকার নামছে
সেই কবে থেকে আবার খুঁজতে শুরু করেছি
মামাবাড়ির উঠোন।
2020র জানুয়ারীতে এই কবিতাটি লিখবার পরে আমি নুতন করে পড়তে শুরু করি 1996 এ প্রকাশিত আমার প্রথম কবিতার বই-'যাপনচিত্র'।নিজেকে 25 বছরের দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখে নিতে থাকি।কবিতার যাত্রাপথে কত নুড়ি, পাথর ও ভাঙা কাঁচ ছড়ানো থাকে।একজন কবির সেই সব টপকে টপকেই নিজস্ব জার্নি।আমি এখনো নিজেকে খুঁড়তে খুঁড়তে হেঁটে চলেছি রৌদ্র কিংবা ছায়ায় কবিতার হিমবন্দরের দিকেই।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন