চা পাতা। ৫১


  চা পাতা । ২য় বর্ষ । সংখ্যা ৫১





স  ম্পা  দ  কী  য়

সব মঞ্চই সমান। সেটা কলকাতার হোক বা কুচবিহারের। সরকারি হোক বা বেসরকারি। তবে কতজন শ্রোতা বসে কতটা মনযোগ দিয়ে শুনছেন সেটাই বিষয়। কতজন নিজের লেখাটি পড়ে টুক করে সরে যাচ্ছেন সেটাও বিষয়। রাজধানী শহরের মঞ্চে দাঁড়িয়েই লম্বা চওড়া করে কৃতজ্ঞতা পুষ্প অর্পন করার কোন মানেই হয় না। অনেক অগ্রজেরাই অন্তত পাঁচজন তরুণকে তাঁদের দলে চান ওই পাঁচজনকে নানাভাবে প্রশংসা করেন বছরের পর বছর। ওই পাঁচজন খুব তাড়াতাড়ি বৈতরণী পার হওয়ার সমস্ত মন্ত্র আত্মস্থ করে ফেলেন। সৎ থেকে ভুল করা ভাল।  সৎ থাকতে পারাটাই একটা বড়সড় পুরস্কার। কবিতা পাঠ শেষে শ্রোতাদের আহা করে ওঠাটা পুরস্কার। পাঠকের চোখ থেকে মননে ঢুকে যাওয়াটাই পুরস্কার। অন্যের চোখ দিয়ে কবিতা পড়বেন না।  অমুক কবি ওনার কবিতাকে ভালো বলেছেন বলেছেন বলে আপনাকেও তাকে ভালো বলতে হবে এমন কোন মানে নেই।  নিজের চোখ দিয়ে পড়ুন। নিজের মাথায় রেখে হাত বুলিয়ে দেখুন কতটা সয় আর কতটা র‍য়।  আপনার সৃষ্টি পাঠকের হাতের ঘাম চায় ময়লা চায়। আর কিছুই নয়।





শীত-কাহন                     

মধুমিতা  চক্রবর্তী  

 এই যে এত শীত শীত করছে, এই যে এত নিজের ভিতর নিজে গুটিয়ে থাকা, বহুদিন পর দুটো হাতের খুব কাছে চলে আসা...
দহনের সময় এলে সেই তো আবার ছড়িয়ে পড়া,
আবার নিজের কাছে থেকে নিজেরই সরে যাওয়া!

 কাঁচের শার্সি  থেকে ঘন কুয়াশার বিলাসী  দূরত্ব  আর হিমঘন রাত থেকে কাঠকুটো জ্বালানো আগুনের নৈকট্য....
কোনটা বুঝতে পারলে নিজের মতো করে!! 

 চুনাভাটি বাঁয়ে রেখে আদমা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে শীত নামছে , প্রজাপতি উপত্যকা ঘিরে এখন পাতা ঝরার শব্দ.... 
এখনি সূর্যাস্তে রঙিন হবে সিঞ্চুলা

রোদ চশমাটা খুলে নাও!

                      

উপশম

শুভদীপ ঘোষ


সান্স ক্রিমের বিজ্ঞাপন থেকে মুখ ঘুরিয়ে দেখি
               দীর্ঘ ছায়ার ভিতর ক্লান্তি জমে আছে

 জীবনের গভীরে ভালোবেসে নিয়েছি
                        ম্যাজিসিয়ানের টুপি

হাতের দাগ মুছে  যায় নরম তোয়ালায়

প্রেক্ষাগৃহের অন্ধকারে
      জোনাকি ক্ষেতের ঘুম নিয়ে আসে ফ্যান্টাসি

গ্রিভেন্স বাক্সে ফেলে এসেছি
                    চিরকুটে লেখা কবিতা




মুহূর্তের অভিধান

অন্তরা চ্যাটার্জী

হাওয়ার ভিতরে লেখা মুহূর্তের অভিধান 
হসন্তের বিরতি অথবা
যুক্তাক্ষরে প্রিয় নাম।
নীল বারান্দা, প্রজাপতি স্নান
মাঝরাতের জ্বরে কাঁপে নক্ষত্রের শিরোনাম।

বিচ্ছেদ সিন্দুকে জমে স্মৃতির অ্যালবাম।

শতাব্দীর আঁতুড়, সময়ের ক্যালেন্ডার, 
প্রতিটি মুহূর্তই তাতে অতীত সিলেবাস।




মাথুর

সুস্মিতা সাহা

রোজ রাতদুপুরে কৃষ্ণের বাঁশির শব্দে
আমার ঘুম ভাঙে—
জানালার গরাদ ধরে আমি উঁকি মারি;
কৃষ্ণ চিরাচরিত অপেক্ষায় নিমগ্ন!

আমার আকাঙ্খিত অভিসারের পথে
অন্য রাধার পদধ্বনি শোনা যায়৷




ভ‍্যালেনটাইন 

সুপম কর্মকার

ডাইরি ভর্তি বিষন্নতা আজ বন্ধ থাকুক,
গন্তব্য স্থির না ক'রে এগিয়ে চলো ;
রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা
তোমার ভাগ্যে নেই,
একের পর এক স্টেশন পেরিয়ে যাবে
তুমি ভয় পেও না ;
শুকনো গোলাপের পাপড়ি খসে যাবে,
তুমি জানো,
তবুও সযত্নে তুলে রাখা গোলাপের কাঁটা
ফিরিয়ে দিবো না ;
তোমার ভালোবাসাতে স্নেহ ছিল না,
ছিল না আবেগ,
শুধু ছিল শাসন আর শোষণ :
রক্তাক্ত মন আত্মঘাতী হয়েছে কতবার
তুমি বুঝতেও পারোনি ;
না, ল‍্যাইলা-মজনু নয়,
রোমিও-জুলিয়েট নয়,
লাল নীল গেরুয়া নয়,
তুমি চেয়েছিলে মুক্ত হতে ---
ভালোবাসার বাঁধন
শিকল মনে হয়েছিল তোমার,
তাই সেদিন ডানা ঝাপটানোর সময়
তোমাকে আটকায়নি আর,
তুমি মিলিয়ে গিয়েছিলে
ঘোর অমাবস‍্যার রাতে...


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১