আমার কবিতাজীব : নদীতে মিশে যাওয়া এক কান্নার জীবন

৩.

খুব বহুমাত্রিক ও বর্ণময় এক বাল্যকাল কাটিয়েছি আমি। বিচিত্র সব জনমানুষের ভেতর ছড়িয়ে থাকা এক দাউদাউ জীবন আমার। আজও মানুষ দেখবার নেশা আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। আমার দেখাটাকে বরাবরই সজাগ রেখেছিলাম আমি। কত কত দেখা আমাদের! মানুষের বেঁচে থাকবার গল্পগুলির কাছে চুপ করে বসে থাকি। টুপটাপ শিশির ঝরে পড়তে থাকে খড়ের চালের গ্রাম্য বাড়িতে।শিশিরপাতেরও কিন্তু শব্দ হয়। কুয়াশা জড়িয়ে হেঁটে আসতেই থাকেন অগনণ মানুষেরা। আমি কোন এক হাটে দেখা পেয়েছিলাম ফুলচাঁদ বর্মণের।ফুলচাঁদ ছিলেন তেভাগা সৈনিক।লালপার্টির মিছিলে হেঁটে জেলে গিয়েছিলেন।জোতদারের লাঠিয়ালদের আঘাত তার শরীরে। পরে কোচবিহার রাজার শিকারবাহিনির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। এক পুরোন কালপরবের গন্ধ খুঁজে পেয়েছিলাম তার কাছেই।


৪.

আমার কবিতায় এসব এসে পড়ে অবধারিতভাবেই।মানুষের যাপন। দিনের পিঠে টপকে যাওয়া দিন কেমন ম্যাজিক হয়ে আছড়ে পড়ে।আমি একসময় লিখে ফেলি_

‘রোদখুঁটিতে উঠে পড়ছেন গানমাষ্টার’

কিভাবে খিদে ঢুকে পড়ে। স্বপ্ন ঢুকে পড়ে। হাহাকার ঢুকে পড়ে আস্ত এক জীবনের ভেতর। নদীর চরে বালাবাড়ির কাশিয়া হলখল হলখল করে। কবিতা আসলে কান্নার মতো।জলমগ্ন এক জনপদের ওপর অনন পাখিদের উড়ালের মতোন। কবিতা লিখতে এসে আমি বেছে নিয়েছি এক তীব্র অসুখের জীবন।অপমানের জীবন। অভিশাপের জীবন। সারাজীবন তরুণদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছি আমি। নিজের জন্য তো কিছুই চাই নি আমি!তরুণদের আত্মীয় ভাবি আমি।আবার নুতন লিখতে আসা কেউ ব্যাবহার করে তুমুল এক আঘাতও উপহার দিয়ে গেছে আমাকে ! না কষ্ট হয় না এখন আর। কেননা,আজ এটুকুই বুঝি আমাকে আমার কাজটাই যত্নে আর মমতায় করে যেতে হবে।





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১