চা পাতা ।।৫০

চা পাতা সাপ্তাহিক ।। দ্বিতীয় বর্ষ।। সংখ্যা ৫০  


কবিতা কি বা কেন ? এই জানার শেষ নেই। প্রতিটা প্রজন্ম এসে প্রতিটা দশকে কবিতাকে অন্য আঙ্গিকে সংজ্ঞায়িত করছে। কবিতা এক আমিকে অনেক আমিতে ভাগ করে আবার একটা সুতোতেই হাঁটছে। কবিতার এত ব্যখ্যা বিশ্লেষণ ভালো না অনেকসময়। বরং কবিতায় ডুবে থাকাই ভালো লাগে।

 চা পাতা সাপ্তাহিক, যা অনলাইনে প্রকাশিত আসছে এক বছর ধরে। আজ তার ৫০ তম সংখ্যার প্রকাশ। ভীষণ ভালো পাঠক পেয়েছে  চা পাতা, অনেক ভালো লেখক পেয়েছে চা পাতা। ভুল করে করে শিখতে ভালো লাগে, পাশে থাকবেন সবাই। চা পাতা'র স্বাদ ও সুগন্ধে সাথি হয়ে। 



সুদীপ্ত মাজি'র  কবিতা

বসুন্ধরা রোড

বহুদিন পর বসুন্ধরা রোড

সমস্ত কুসুমস্মৃতি, জাগ্রত গানের রেণু, যাবতীয় জ্যোৎস্না-অভিলাষ
টিনের তোরঙ্গে রাখা মায়া

হঠাৎ রাস্তার পাশে এতদিন পরে আজ আলো জ্বলে ওঠে 
আঁধার ঘনায়

তোমার ঠোঁটের পাশে অনির্বচনীয় স্বেদ, ছিঁড়ে যাওয়া জীবনের 
গালগল্প, আলো

দুজনের হাসিমুখ কতদিন পরে আজ এক ফ্রেমে আজ জেগে উঠলো,
বল...

বহুকাল পরে এই ধর্মসমন্বয় 






সুবীর সরকার-এর কবিতা

অপেরা হাউজ

দ্যাখো,অপমানের পাশে একটা তীব্র অপেরা
                                                    হাউজ
সেখানে বাজনা বাজে।
আজকাল মেজাজ হারাচ্ছি।কষ্ট
                                                 গোছাচ্ছি।
সরষে খেতের ভেতর তীব্র এক মায়া!
কাউকে দেখাবো না ক্ষতচিহ্ন
এক বুক দাহ নিয়েই ডুবে যাবো দহের
                                                        ভেতর
আমাদের জন্মান্তর নেই।
রোদে মেলে দেওয়া টুপি নেই।
অথচ জানালা খুলে দিলে রোদ ঢোকে
                                                    ঘরে
হাঁসের পিঠে বসে থাকে উদাসীন পাখি
আর বিবাহের পাশে কিভাবে জুড়ে বসে পুরাতন

                                                         সানাই


মৌমিতা পাল -এর কবিতা

মনাস্ট্রি কলিং - ৮.

থিকথিক আঁধারে নিশপিশে নেশা
উলঙ্গতা পায় সান্নাটা ছায়
বুড়োটে প্রেমে ভরা আসরে প্রেমিকা মেহমান
নীলাঞ্জন , আমি মুর্শিদকে আজীবন
একটাই অনিরূপিত প্রশ্ন ছুঁড়ে দেব - 
"চুমু কেন খেলি!"
মুর্শিদের মাকে আমার বড়ো ভালো লাগে।




মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়-এর কবিতা

চন্দ্রবিন্দু সরিও না

তুমি চন্দ্রবিন্দু সরালে চাঁদ সরে যায় আমার থেকে। দুলন্ত ইজিচেয়ার দোল খেতে থাকে শূন্যে
ছায়ার ভেতর গড়াতে থাকে রেড ওয়াইন
 গ্লাস ভাঙার  শব্দ ওঠে দূরে
 সুড়ঙ্গ  খুঁড়ি রোজ আমার থেকে তোমার বাঁকে । পেন্ডুলামে ঝুলে থাকে সম্পর্ক দীর্ঘ  শ্বাস ফেলে মৃত্যুর অপেক্ষায়

 হাতের শিরায় শুধু ছাপ থাক

চন্দ্রবিন্দু  সরিও না
চাঁদ সরে যাবে চোখে জেগে থাকা আদর নিয়ে







অনন্যা দাশগুপ্ত-এর কবিতা 

পার্বণ

তোমার বাড়ি আমি চিনি
তোমার বাড়ি আমি যাই রোজ

স্বপ্নে...।

আবদারে মেখে নিই প্রিয় গন্ধ
তুমি যদি চিনতে পারো এই ভেবে...

তারিখ বদলে গিয়ে আজ ডিসেম্বর ২০...

শহরে কত আলো
জমকালো সাজপোষাক-


তখন...

আমার ঘরে বিচ্ছেদের পার্বণ।

মায়ের গন্ধ আষ্টেপৃষ্ঠে মিশে আছে মনে,তবু মাকে ছুঁয়ে দেখতে পারছিনা।






সঞ্চালিকা আচার্য-এর কবিতা
দ্য কল অফ ফোর্টটিন্থ ডে

তোমার জন্যই এই রাজকীয় কুমারীবেশ।

এই যে লাল শিফনে এমব্রয়ডারি, নিখুঁত ফিলিগ্রির গয়না, চোখে কিশোরীলাজরঙা বিস্ময়, সব তোমার জন্য।

সঞ্চিত মুক্তো সব এক এক করে খসে যাচ্ছে, অথচ এখনও একটা শীষেও সোনালী রঙ দেখলাম না, ঠাকুর।

আজ আবার সব আয়োজন করে বসেছি। বীজাধার থেকে বেরিয়ে এসেছি সমূহ আলোকসজ্জার প্রবাহে, বদ্বীপে এসে গর্ভমুখ প্রসারিত, সব আয়োজন যথাযথ।

শুধু তুমি,
বাইরের খোলস ছেড়ে তুমি শুধু একবার এস প্রিয়,
পবিত্র নগ্নতা ছাড়া সঙ্গম সফল হয় না কখনও।







বিবেকানন্দ বসাক-এর কবিতা

দিগন্তবিস্তৃত মাঠে

এই দিগন্তবিস্তৃত মাঠে
প্রত্যাশার পারদ ওঠে নামে
নদীও রেকর্ড বুক ঘেঁটে জেনে গেছে
ভালোবাসার কোনও বয়স হয় না
তবুও মায়াবী বিকেল হাতছানি দেয়
ভাঙা স্বপ্নের ভেতর
পথের বাঁকে ফেলে আসা
দিন জানে না টুকরো মেঘের আড়ালে
কীভাবে হেসে ওঠে  রোদ








মৌসুমী চৌধুরী'র কবিতা

প্রান্তিক জীবন
     
চৌকাঠ পেরিয়ে ধোঁয়া ধোঁয়া কফি মাগে
জেগে ওঠে বিপ্লব, ডালিম রঙের কবিতারা।
মঞ্চের আলোয় ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পতঙ্গ
কলমের অপমানে বিষন্ন কবি
প্রান্তিক বুকে জ্বলে ইঁটভাটা।

কবিতার পরবাসে শহরের শিলালিপি
কলমে লুপ্ত হয়ে গেছে বোধ
চোখ রাখি উল্টো দুরবীনে।

জিরাফের বাগানে শরণার্থী হয়ে
সূর্যের রাহুগ্রাস, মেধায় জং-রঙ।

আমি মাটি-রঙে আঁকি প্রান্তিক জীবন।

মন্তব্যসমূহ

  1. "বাইরের খোলস ছেড়ে তুমি শুধু একবার এস প্রিয়,
    পবিত্র নগ্নতা ছাড়া সঙ্গম সফল হয় না কখনও।" - দ্য কল অফ ফোর্টটিন্থ ডে,সঞ্চালিকা আচার্য

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১