চা পাতা।। সংখ্যা - ৪৭







 সাহিত্য ভালোবাসার জন্য। ভালোবাসাকে বর্ণনা করার জন্য।  আমাদের কবিতাতুতো ভাই -বোন , দিদি ,দাদার পাশাপাশি  কবিতাতুতো শত্রুর সংখ্যাও রোজ বাড়ছে। আড়ালে বিদ্বেষ নিয়ে ঘুরছে অনেকেই । একটু সু্যোগ পেলেই আপেলটিই ছুঁড়ি হয়ে গেঁথে যাচ্ছে সযন্তে আগলে রাখা নরম স্থানে। কেন,  কেন এরকম হচ্ছে! এত ক্ষোভ বিক্ষোভ কেন? কবিতাই তো লিখি। এত লোভ কেন ! লোভের পরিতৃপ্তি না না ঘটার জন্যই কি এসব ? চলুন না সৃজনের ভারে হেলে পড়ি মাটির দিকে।



উদয়ার্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়

জবানবন্দি

চিৎকার দিয়ে কথা বলার ভেতর
 জন্ম নিচ্ছে অনুশাসন স্বাদ
নিজেদের সংগঠিত করবার যুক্তি

যদি এমন হয়
মানুষের পেটের ভেতর উত্তাল কাশ্মীর
কিংবা ছুটতে থাকা রোহিঙ্গারা
কিংবা সেইসব বিধ্বস্ত মাতৃভূমি

আমাদের প্রশ্ন তুলতে হয়
হে মহান সেনাপতি !
পৃথিবী আর কতদিন ঘুমিয়ে থাকবে
সভ্যতার শীতল হৃদয়ে ?

------------------------------------------



দুটি কবিতা 
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় 
ট্রেন ছেড়ে গেলে


প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে গেলে 
স্টেশনের ক্যানভাসে 
একটু একটু করে রঙ ধুয়ে যায়
কথা বলতে বলতে কথারা সরে আসে
অনেকটা শরীর গুটিয়ে এনে
একটা বিন্দুতে এসে জড়ো হয়

রুক্ষ কথাদের এখন শুয়ে পড়ার সময়
খালি হয়ে আসা অক্সিজেনের থলির সামান্য অংশ
বাকি অন্ধকারটুকুর জন্যে

স্টেশনের শাসকের হাতে এখন অন্য রঙের প্রাচুর্য
অল্প একটু রঙ গুললেই অনেকটা দাগ হয়ে যায়
আঙুল তোলার মতো নেই এখানে কেউ
মাথা নিচু বলে এখানে তাড়াতাড়ি সন্ধে হয়

কোনো কোনো গলির মুখে বসে থাকে
সাদা চুলের মতো স্থির মুরগি
কোনোদিন চারপাশ ফরসা হয়ে এলে
শেষ ট্রেনে উঠে চারপাশ মুখর করে দেবে।



ঘন্টা বাজলে


ঘন্টা বাজলেই মনে হয়
কোথাও যেন দৌড় শুরু হল
পর্দা সরে গেল
বেরিয়ে এলো সূর্যের আগুন শরীর
গলে গলে পড়ছে কালো রস 
রাস্তার ধুলোর মতো জেগেছিল 
যে সব ধূসর পোকা
আগুনে তাদের খোলা পুড়ে যাচ্ছে
গুটিয়ে যাচ্ছে যাবতীয় সাজানো দোকান

একটু পরেই শুরু হবে রঙ খেলা
আগুনের রঙ
গায়ের চামড়ায় ধরা পড়ে যাবে
কত গভীরে লুকিয়ে গান ।

--------------------------------------------

নাদিরা

রক্তহীন ভোর ও মানুষ


প্রবল ঝঞ্ঝায় কেটেছে ক্লান্ত ভোর
হৃদয়ের জলবায়ুর গতিপথে এসে দাঁড়ায় কুয়াশারা
নিঝুম দুঃখে মিইয়ে গেছে ইষ্টিকুটুম পাখিদের ঘরবাড়ি, 
বহু পূর্বে কোনো রাতে পথে ছিল জমকালো আলোকি..... 
এখন হিমে ভরে উঠেছে সবুজ পাতা-কাঁচের বাতি দান ও বায়ু ; 
আমার বুকেও জমেছে নীলরঙা কুচি কুচি বরফ  । 

দেখি, কিশোরী মায়াবী চোখে তাকিয়ে আছে হাড়হিম মৃত্যুপানে 
স্তাবকেরা এসে দাঁড়ায় কর্দমাক্ত রক্তের পথে... 
ঘৃণ্য শব্দ ও আত্ম বিশ্বাসঘাতকতায় জমাট 
সংক্রমণের দাবদাহে শ্রান্ত ক্লোরোফিল --
চিৎকার করে ওঠে... ' বাঁচতে দাও নাহয় হত্যা করো এখন ' 
ভোর হয়েছে অনেকক্ষণ । নিষ্প্রাণ হিমোগ্লোবিন কুরে কুরে খায় সকাল......

-----------------------------------------------------------------------
সুপম কর্মকার 

ক্যাকটাস


ফিরে আসা ট্রেনগুলো সব দাঁড়িয়ে থাকে নির্জনতায়,
                  কতশত ইতিহাস জমে আছে 
                                      ক্ষতবিক্ষত আবেগ---

নিস্তব্ধ অন্ধকারে কে যেন আমার মুখোমুখি !
অ্যালকোহলের গ্লাসে শেষ চুমুকের পর 
               কেটে গেছে সারাটা রাত
                                      হেবিয়াস কোরপাস;

প্রেমের নামে নোংরামির শাস্তি পায় অপরিণত ফিটাস,

                                         রক্ত 

                            আঁধার নেমে আসে নদীর বুক বেয়ে...

---------------------------------------

বর্ণজিৎ বর্মন

অন্ধকারের রাজ্যপাট 

বন্যশ্রী নামে মেয়েটার
যৌনাঙ্গ আলের চোয়াল ওয়ালা কাঁশ দিয়ে
চিড়ে ফালাফালা
অঘ্রাণের মাঠে হিম হয়ে পড়ে আছে ।
তিনশো পয়ষট্টি দিনের কাজ
খোয়াব না যতদিন বাঁচব,

চল কিছু গিলি -
পণ্ডিতদের মুণ্ডো উড়াই আজ
উৎসব খেলি -
ওর
বর্ণপরিচয় মানি না ।
আকাশ জুড়ে অন্ধকারের রাজ্যপাট চালাই ।

-----------------------------------------------------------------

বি.দ্র. - বিশেষ কারণবশত এই সংখ্যাটি নির্দিষ্ট দিনের দুদিন পরে প্রকাশিত হল।    


সম্পাদক- * তাপস দাস  * আলিপুরদুয়ার  * 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা-পাতা ৯১