চা পাতা সাপ্তাহিক। ৪৩



  সম্পাদকীয়
  

    পূজো শেষ। আবার মানুষজন তাদের প্রতিদিনের জীবনে ফিরে যাচ্ছে। তাদের সেই সুখ ও দুঃখ ভরা জীবন। সুখ দুঃখ ব্যপারটাতেই অবশ্য ফাঁকি আছে । আমাদের শিক্ষা খুবই কম। তাই কখনো সুখকে দুঃখ, আবার দুঃখটাকেই সুখ ভেবে মাতামাতি করে ফেলি । আমাদের ঘরবাড়িকে বস্তুভান্ডার করে একটা প্রবণতা  এখন সবার মধ্যেই আছে। আর সেই কাম্য বস্তুগুলি না পেলেই মনে হচ্ছে দুঃখ পাচ্ছি। ডিভাইড এবং রুল রাজনীতির এই বিষয়টিকে এখন শিল্পপতিরা ব্যাবহার করছেন । তাই এখন আর গায়ে মাখা সাবান দিয়ে হাত আর মুখ ধুতে পারবেন না। জীবন ধুয়ে সাফ হয়ে যাক আপনাকে বিভিন্ন ফ্লেভারের একই জিনিস বারবার কিনতে হবে। 
 


জোছনা চন্দন
     
 মাধুরী হালদার


চোখের পাতায় নিয়ে প্রতীক্ষার জল,
স্বপ্নের তুলিতে আলপনা এঁকে
বসে আছি তুলসী তলায়;

বুনোফুলের মালা,
শিরিষের দুল,
ঝিঁঝিঁর ঝংকারে
ঘরভোলা সুর !

ভুলে গেছি পুজোর ডালা;
ধুপের ধোঁয়ায়
ভরে গেছে মন্দিরের উঠোন  !

আরতির প্রদীপ হাতে নিলে
ধুনোর ধোঁয়ার আড়ালে
পূর্ণিমার গোল চাঁদই ভাসে !

সব ভুলে যাই আমি
সারা অঙ্গে মাখি
তোমার জোছনা চন্দন !


দুটি কবিতা

 মারুফ আহমেদ নয়ন


প্রেমের সমস্ত আয়োজন

প্রেমের সমস্ত আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে, মায়াবী রাজহংসীর শরীর থেকে ঝরে যাচ্ছে সমস্ত পালক, বেনামী তীর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে নদী কাহিনী, পরগাছা জন্মাচ্ছে গাছের দেহ কোটরে, সবুজ আপেলগুলো খেয়ে ফেলছে পোকারা, আমাকে খেয়ে ফেলছে তোমার  স্মৃতি কাতরতা, উঁইপোকার সংসারে যা দেখিনি এতোকাল তা দেখার পূর্বেই যদি ঘুমিয়ে পড়ি সূর্যমুখী বীজের ভেতরে, তবে হাওয়ায় উড়বে কি মন, শিমুল তুলোর মতোন, যদি আর না দেখা হয়, যদি আর না কথা হয়, স্মৃতির কোষে কোষে কি রিম রিম বাজতে থাকবে পরাজিত প্রেমের সেতার


জলবিম্বে বিশুদ্ধ গোলা

আমার এমন মন্দ কপাল, কিছুই সয় না, এতো মেঘ এসে খেলা করে শৈশবের উঠোনে, তবুও বৃষ্টি নামে না, ঝাউবনে সারারাত হাওয়ার মাতম, অদৃশ্য পাখিদের উড়াউড়ি, আফিম ফুলের পাশে ইর্ষাপরায়ণ একটা দুপুর কেনো যে অন্ধকার রাত্রিতে প্রত্যাশা করে কোন দৈব কন্ঠস্বর, হাওয়ারা কি জানে শুকনো পাতা ও সতেজ কুড়িদের মন, এমন পোড়া কপাল নিয়ে এর ওর সাথে ঘুরি ফিরি, তবুও বিস্ময়ে জুঁই জবা ফোটে, অদৃশ্য ঘ্রাণ ও জলে ভরে যায় চারপাশ, জলবিম্বে শুধু তোমাকে দেখি এক বিশুদ্ধ গোলাপের মুখ




হাজার সঙ্গমের পর 



   প্রসেনজিত রায়
                                                               

       একটা কর্তব্যবোধ থেকে প্রতিদিন মদ খাওয়া
       রাস্তা পারাপার, শিরদাঁড়া কামড়ে আকাশ দেখা 
       তারপর মাটি আঁকড়ে সঙ্গমে লিপ্ত হয় ঘরছাড়া ফিনিক্স

       নাভিমূলে রক্ত আছে, শরীরে বাসা বেঁধেছে ভূগোল 
       ক্রমশ হলুদ হয়ে উঠছে আমাদের প্রথম সন্তান 
       আচ্ছা, আমাদের রক্তে আদৌ কোনো সম্পর্ক ছিল! 

       এ নদী থেকে উঠে আসা বড়ো দায় 
       সমুদ্রের দিকে গড়িয়ে গেছে পথ, বীর্য 
       হাজার সঙ্গমের পরেও আমাদের রক্ত এক হল না!


সম্পাদক- তাপস দাস
tapsds00@gmail.com  
                                                     

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

ধারাবাহিক গদ্য

চা পাতা ৯৯