চা পাতা সাপ্তাহিক  ।।  সম্পাদক - তাপস দাস  


স ম্পা দ কী য়


এই মাটিতে এই বাতাসে কবিতার মাদক মিশে আছে।  প্রত্যন্ত গ্রামে, প্রান্তিক শহরে লুকিয়ে লুকিয়ে লিখে ফেলছে  ভয়ঙ্কর ভালো ভালো কবিতা। তাদের খোঁজার কাজটি খুবই কঠিন। তাদের নষ্ট করে দেবার জন্য বিচিত্র জগৎ চারিদিকে সাজানো গোছানো।  প্রতারণার ফাঁদ, চাটুকার প্রকাশক, সস্তা জনপ্রিয়তা ও প্রতিযোগিতার ফেসবুক গ্রুপ, সাপ্তাহিক সেরা ঘোষণাকারী কিছু গ্রুপ এদেরকে নষ্ট করার জন্য যেন উঠে পড়ে লেগে আছে। উপযুক্ত অগ্রজের খুব অভাব আজকাল।  আমাদের অগ্রজেরা যেমন অগ্রজদের পেয়েছেন,  বর্তমান দশকের লেখকেরা কি পাচ্ছে! পেলেও কয়েকজন মাত্র।  তবে সব অগ্রজের কথাও গ্রহণ করতে নেই। লিখতে এসছি লিখব, কাদায় থেকেও কাদা না লাগিয়ে লিখে যাওয়াই হয়তো আমাদের কাজ।  বাকিটা নাহয় সময় বলবে....


********* কবিতা *********
   

যতিহীন যাত্রায় অপাঠ্য কবিতা

   
স্মৃ তি জি ৎ

বুঝতে পারি, সেই অর্থে আমার কোনো গন্তব্য নেই
এক একটা ল্যান্ডিং পেতে একাদশ পর্ব ঘাম ঝরাতে হয়
প্রতিটি জোড় ল্যান্ডিং এর সাথে জুড়ে থাকে
কিছুটা স্থিতবাস আর বাকি সবটাই পরবাস
বুঝতে পারি, শেষপর্যন্ত কোনো যাত্রাই শেষ হয় না
মৃত্যুর পরও চলার দায় দিব্যি করে রেখেছে প্রাদি সমাজ
এখানে আছে মুখবদলের রেস্টুরেন্ট
নতুন ঘাগরার ওপরে আলোকিত নাভিকুম্ভে স্নান করে
আমার সুকুমার চোখ । মাঝে মাঝে 'ফেমিনা শপিং মলে '
দু'হাতে ওড়াই খুশির পালক --রামধনু রঙের ওড়না
বুঝতে পারি, কোনো যাত্রাই চূড়ান্ত গন্তব্য খুঁজে পায় না
তাই নামহীন পথের দু'ধারে উড়িয়ে দিচ্ছি গোবিন্দের খই
আর অপাংক্তেয় পঙক্তিমালার অপাঠ্য কিছু কবিতা আমার
  


অঙ্গচ্ছেদন


প্র সে ন জি ত  রা য়

    পাতার ফাঁকে থমকে দাঁড়ায় হরিণের ডাগর চোখ
     বিষণ্ণ বাতাস নিরুত্তর, রান্নাঘরে স্বর্নলতার সংসার
     না, দেবদারু বনে আর ছায়া নেই!
     মাটির মুখে আগুন, বুকে জল, স্বরযন্ত্রে বসে আছেন ঈশ্বর
     চোখদুটো নীল-জলে চোবানো আছে
     কানদুটো খুলে নিয়ে গেছে কামার
     কর্ণপটহে লোহার চোঙ বসিয়ে দেবে
     মৃত ফড়িং-এর ডানা কেটে নিয়ে যায় পিঁপড়ের দল
     কিছুটা সময় নিলে দেখতে পাব
     আমাদের হাত ঝুলে আছে সুপারি গাছের ডালে
     শুধু কথায় কথায় আমাদের লিঙ্গ ফুলে ওঠে...


আদল


তা প সী  লা হা

পাতাবাহারের গলি পেরিয়ে অভ্রান্ত ঠিকানাটা
আমি আসলে পৌছাতে চেয়েছিলাম।
তোমার থেকে অনেক যোজন দুরে, মোহ মায়াবর্জিত এক জগতের আস্তিন ঘেটে ঘেটে
হ্রদয়টা ঘেউ ঘেউ ছাড়া আর কি বা শিখতে পারে
নিত্য দেখে দেখে এ মুখ আয়নায় ঘেন্না ধরেছিল
এই পাঁকের শিক্ষানবিশী করছি
বারোটামাসের তেরো রাত সমুদ্রের অতলান্ত ঘোর আর বিস্মৃতি
কয়েকবার ভেসে উঠলে আমার লাশটা পাতাবাহারের মত নোনতা গদ্যে ছড়িয়ে যায়
ফেনিভ আদলে।


কেমো চলছে


না দি রা

বাইশটি বছর কেটে গেছে কল্পনার ঘোরে
দেবদারু আর নীল অশ্বত্থ ছায়ায়, 
ভাটির দেশের গানের মতো ভেসে এসেছিল
নকল চুম্বকের উল্টো টান.... 
ছিল প্রেম ; ক্ষুধার্ত মায়ার্ত রাত্রিবাস 
স্বপ্নের বশে অমরাবতীও  । 
তেইশ বছরে শুনি বিদ্রোহ ডাকে
ক্রন্দনরত চিল আর পেঁচাদের হাঁক,
চিলেকোঠার কাঠঠোকরা অগোছালো ঘোরে
রুক্ষ সাতাশ বলে  " বিপ্লবী জাগো  "...... 
বুকে... মধ্যবর্তীনী জোনাকি
মার্জিন হতে সরে যাই ঝোড়ো বাতাসে  ;
দ্বিধাদ্বন্দ্ব কড়া নাড়ে বারবার । 
তিরিশটি বছর পেরিয়ে গেল প্রলাপে
এখনও আমি জাহাজ গড়ি শুধুই .... 
কম্পাস হাঁকে  " নাবিক ভাসাও এবার তরী "
পালগুলির সর্বশেষ কেমো চলছে ......
                      

সম্পাদক - তাপস দাস       

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০০

চা পাতা সাপ্তাহিক