ধারাবাহিক গদ্য
৩৪. দেওচড়াই হাটের গানের আসর থেকে হেঁটে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিল সখীচরণ। হাতে ধরা ছিল সেই চিরপুরাতন বাঁশিটি। তরলা বাশের বাঁশি। ছয় ছিদ্রের। এই বাঁশির আওয়াজ শুনলে পাষানের বুকেও আবেগের উচ্ছাস জাগে। খুনীর চোখেও জল আসে। এমনই এই বাঁশির মহিমা। প্রায় তিন কুড়ির দু’চার বছরের কম সময় ধরে এই বাঁশি সখীচরণের সম্পদ। দেশ দুনিয়ায়,গা-গঞ্জের সকলেই সখীচরণের বাঁশির মহিমা জানে।হাটবারগুলিতে হাটের ভেতর এই কারণেই সখীচরণের অতিরিক্ত খাতিরদারী জোটে।শিঙ্গারা, জিলিপি, চা, সিগার সব মিলে যায়। খালি একটু বাঁশিতে ফুঁকে দেওয়া, আর কি। সখীচরণের বাবা ছিল এলাকার মস্ত গিদাল। তার ছিল গানের দল। পালাগানের দল। সবাই বলতো কালুচরণের দল। জোতদার জমিদার মাতব্বরের ঘর থেকে নিয়মিত বায়না আসতো।কালুচরণ ঘুরে বেড়াতেন গঞ্জের পর গঞ্জের পরিধী জুড়ে। মাঝে মাঝে সঙ্গে নিতেন ছোট্ট সখীচরণকে।তখন শুরু হয়েছে সখীর বাঁশি বাজানোর তালিমপর্ব।সেই সময় একবার সাহেবপোঁতার সুখেশ্বর দেউনিয়ার বাসায় গানের দল নিয়ে পালা গাইতে গিয়েছিলেন কালুচরণ তার দল নিয়ে।ছিল সখীও। বাচ্চা সখীচরণের বাঁশি শুনে দেউনিয়া সখীচরণকে উপহার দিয়েছিল এই বাঁশিটি। ৩৫. তারপর কত কত দিন পার হয়ে গেল।