পোস্টগুলি

মে, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ধারাবাহিক গদ্য

ছবি
২৮. আষাঢ়ের আকাশ জুড়ে থরে থরে সাজানো মেঘের দলা।সেই মেঘ ও হাওয়াভরা আকাশের প্রেক্ষিতে কেমন এসে পড়ে বক্করের ঘোড়ার গাড়ি।আর সেই সজল চোখের সাদা কেশর ও তামাটেবর্ণ ঘোড়াটির ছুটে চলা আপনমনে,এ এক মায়ামেদুর দৃশ্যপট রচনা করে ফেলেই বা যেন।শালকুমার নাথুয়া কালপানি দেবির হাট আরো কত কত হাটগঞ্জের ধুলো ওড়াতে ওড়াতে বক্কর তার তামাটে ঘোড়াটিকে নিয়ে পরিক্রমণ করতে থাকে।এ এক চিরায়ত দৃশ্যখণ্ডই তৈরী করে ফেলে যা অগনণ মিথের সায়রে প্রান্তিক জনমানুষের ঘুম ও জাগরণে মিশে যেতে থাকে।মেঘলা আকাশের নিচ দিয়ে যেতে যেতে বক্করের শরীরে দুলুনি চলে আসলে সে তো আর নিজেকে গোলমরিচের বস্তার আরালে লুকিয়ে ফেলতে পারে না!সর্বঅঙ্গে তাই গান জড়িয়ে নিতে থাকে বক্কর,নিজেকে গানের খুব ভিতরে প্রবেশ করাতেই থাকে বুঝি বা- ‘চলে রে মোর ঘোড়ার গাড়ি রে ফাঁকা রাস্তা দিয়া আরে নউদারি নাইয়রিগুলান দেখি থাকে চায়া রে’ ২৯. জটিলার কথা খুব মনে পড়ে সোমেশ্বরীর।তার বাল্যসখী।একসাথে কত কত মুহূর্তযাপন তাদের।সেজবিলের বিস্তীর্ণ প্রান্তর,বাওকুমটা বাতাসের মধ্য দিয়ে অন্তহীন ছুটে চলা,অন্তেবুড়ির বাটা থেকে চুরি করে আনা মজা গুয়া,শশীবালাদের দলের সাথে বৈরাতী ও কু

চা পাতা।। ৬১

ছবি
২য় বর্ষ।। সংখ্যা- ৬১

ধারাবাহিক গদ্য

ছবি
২৬. আমাদের জীবনের ভেতর কি অসম্ভব এক মায়া!মায়ায় জড়ানো যাপন! কোন এক লোকমেলায় আমি দেখি শরীরে নাচ নিয়ে কন্ঠে গান নিয়ে হাতিডোবার নদীবাঁকে গানের পর গান।নাচের পর নাচ নেমে আসছে_ ‘গাও হেলানি দিয়া নাচ রে গোলাপী...' এই যে,এত এত দেখা আর মানুষের প্রতিদিনের বেঁচেথাকা;বেঁচেবর্তে থাকাটা আমাকে বিষ্মিত করে!মানুষ বেঁচে থাকে কেন!এই সংশয় আমাকে তাড়িত করে।প্রতিটি দেখা থেকে আমি নুতন করে অনুবাদ করে ফেলি আরো নুতন নুতন দেখাকে।জীবনের স্বাদ নিতে থাকি ক্লান্তিহীনভাবেই। একটা ঝুঁকে পড়া শীতকালের জন্য আমার মায়া ছিল।আমি তো জানিই যে হাটে কমলালেবু বিক্রি হয় সেই হাতে ঢেকিশাক বিক্রি হতে পারেই না।খেলনা বন্দুক দিয়ে আমি তো আর শিকারে যেতে পারি না।শহরে আবার ফিরে আসতে দেখি সেই সব পুরোন যাত্রা।সেখানে লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলতে দেখি পার্ট ভুলে যাওয়া নায়ককে।  একইসঙ্গে বাদাম ও খুচরো পয়সা রাখি পকেটে।মেলা থেকে ফিরেই ফুটো করে দেই সমস্ত বেলুন।মৃত্যু আমার প্রতিপক্ষ নয়।স্বজনের জন্য আমার শোক খুব সাময়িক।হিজল একটি গাছের নাম হলেও আমি কিন্তু হিজলের ছায়ার কাছে কখনো যাইনি।ভাঙা সম্পর্ক থেকে তাই গান উড়ে আসে।এভাবেই লাইটার ও মোমবাতির

চা পাতা। ৬০

ছবি
       চা পাতা  দ্বিতীয় বর্ষ * সংখ্যা- ৬০    সম্পাদকীয়                   বাংলার একটা আলাদাই মাধুর্য আছে , এই প্রকৃতির আলাদাই একটা মায়া আছে। নইলে এত মৃত্যু এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যেও কিভাবে যেন সতেজ আছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও আমরা হেরে যেতে রাজি নই। বিশেষ উত্তর জনপদের এই বিস্তীর্ণ মাঠ - বন যেন অলৌকিক শক্তি হয়ে এখনো আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এই তীব্র যন্ত্রণা চেপে রেখে আমরা কবিতা লিখতে পারছি। এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে। আসুন প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে নিজেরা বাঁচি।                          চা পাতা ব্লগজিন সংখ্যা - ৬০   সম্পাদক- তাপস দাস    tapsds00@gmail.com

ধারাবাহিক গদ্য

ছবি
২৪। প্রাত্যহিকতায় দৈনন্দিনে ভোরের ভেতর জেগে উঠতে চাওয়া ভোরগুলির ভাঁজে ভাঁজে কেমনতর দেহতত্ব এসে পড়ে।তখন ফজরের নামাজ ভাঙে মোল্লাবাড়ির মসজিদে।জামাতের জমায়েত ভেঙে গেলে ভাঙা জমায়েতের টুকরোগুলির বিভ্রম থেকে ভ্রমবশত ভ্রামণিক লোকজতা বিনির্মিত হতে থাকে।কবেকার আভিজাত্য বনেদীয়ানা প্রাচীনতা নিয়ে মোল্লাবাড়ি যেন তার প্রবীণত্বকেই প্রতিধ্বনি ধ্বনির আবর্তে টেনে আনে।তামাকের হাট বল পাটাহাট বল গরুহাটি বল সব সবকিছুকেই মোল্লাবাড়ির চৌহদ্দীতে এনে ফেলতে হয়।কথিত আছে সেই কবেকার ওয়াহাবী ফরাজী খিলাফতের দিনগুলিতে মোল্লাবাড়ির রুকনুদ্দিন জয়নাব ইলিয়াস মইনুদ্দিনেরা দুধসফেদ ঘোড়া ছুটিয়ে চলে যেতেন দিকদিগন্তের পানে।মোল্লাবাড়ির ফরিদা ফুপু আঞ্জুমা নানীর ‘বিয়ের গীতের’ নিজস্ব দল ছিল যার কথা ৫০/৭০ মেইল ব্যাসার্ধের গ্রামগুলির পুরোন নতুন মানুষেরা প্রায় সকলেই জানে। ২৫। জানা অজানার পর্ব পর্বান্তর পেরিয়ে যেতে যেতে পটভূমির ভিতর মোল্লাবাড়ি ঢুকে পড়তে চায়;ঢুকে পড়ার পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ প্রামান্যতা উপযোগী কিনা সেটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে যখন মোল্লাবাড়িই প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতজনের এক পটভূমি হয়ে উঠতে থাকে।পটভূমি কি স্থিরচিত্র হয়ে পটভূমি

চা পাতা।। ৫৯

ছবি
চা পাতা                      (সাপ্তাহিক)             দ্বিতীয় বর্ষ * সংখ্যা - ৫৯    মারণ ভাইরাস আর গৃহবন্দি জীবন আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দিল এই অল্পদিনেই। বেঁচে থাকতে হলে মূল যে প্রয়োজন খাদ্য - বস্ত্র - বাসস্থান ঔষধ আর শিক্ষা। অথচ বাড়িকে আমরা বস্তুভান্ডার বানিয়ে তুলি ক্রমশ। প্রয়োজন মেটাতে সারাক্ষণ প্রকৃতিকে শেষ করে দিতে থাকি। আমাদের অত্যাচারে প্রকৃতির ছটফটানো - কান্না , যা আমাদের কানেই পৌঁছায় না। কয়েকমাসের স্তব্ধতায় দেখুন প্রকৃতি কী সুন্দর সেজে উঠেছে । রোজ বৃষ্টি হচ্ছে। গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া - রাধাচূড়ায় ভরে উঠেছে। প্রকৃতির কান্নায় আমরা গলা মেলাইনি । তবু প্রকৃতির এই সুস্থতা আমাদের অনেক দিনের সুস্থতার কারণ হবে। আসুন সবার মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্তব্ধতাকে ভালোবাসি। সবার সাথে থাকব বলে মাঝে মাঝে একা হয়ে দেখি। দু'পা দূরে দাঁড়িয়ে হাজার মাইল পেরিয়ে আসি ।       সুবীর সরকার আলো আপাতত নিরাপদ হাড়িয়া ম্যাঘের                    নিচে ভুবনমায়ার আলো অপলক জলাশয় সেপ্টেম্বরের পৃথিবীতে উজান দ্যাশের                    পাখি ***********
ছবি
২২। প্রকৃতির মধ্যে লিপ্ত থেকে সে নিজেই আদ্যন্ত প্রাকৃতিক হয়ে ওঠে প্রকৃতির প্রাত্যহিক প্রাকৃ্তের মতো।ধারাবর্ষণের মতো সে প্রকৃতির ভিতর নিজের প্রাকৃতিক সত্ত্বাকে প্রতিস্থাপিত করলেও প্রকৃতির বাইরেও চলে আসতে হয় তাকে একসময়।যদিও এটাকে প্রকৃতির ভিন্ন এক প্রাকৃতিকতা হিষাবেই সে দেখতে চায়।তার দু’হাতের বলিষ্ঠতায় সে বুঝি আঁকড়ে ধরতে চায় জিন্দাপীরের মাজার।পীরের মাজারে সে বুঝি চিরাগও জ্বালাতে পারে!তার এই যাপনযাতনার সন্ধিক্ষণে যেন মহামড়কের চিল ওড়ে,হন্তদন্ত শকুনের লালাভ চোখে জন্মজন্মান্তের এক ঘোর খেলা করে যায়।সে কি তবে মাজারমুখি রাস্তা বেয়ে যেতে থাকবে পোড়াকাঠ সংগ্রহের ব্যাগ্রতায়।প্রাকৃতিক হয়ে ওঠাটাকে সে নিজেই একধরনের রূপকথায় রূপান্তরিত করে নিতে চাইলেও গভীর কোন অপ্রাপ্তিজাত ব্যর্থতাবোধ তাকে কুরে খায়।সে আবহয়ান এক প্রকৃতির প্রাকৃতিক পর্বান্তরে কথান্তরে চলে যেতে চায়।তখন জ্যোৎস্নালোকে পীরের মাজার শোকসংগীতের মতো অন্তহীন খানাখন্দের জালকের জটে ঢাকা পড়ে যেতে থাকে।নিজের সকল সত্ত্বাকে প্রশ্নাতীত কোন নিরপেক্ষতায় দাঁড় করিয়ে দিতে চাইলেও সেই সাহস কি সে অর্জন করতে পারবে।গঞ্জমেলায় জিলিপির দোকানের সামনে দিয়ে আ

চা পাতা।। ৫৮

ছবি
চা পাতা সাপ্তাহিক সম্পাদক - তাপস দাস tapsds00@gmail.com