পোস্টগুলি

চা-পাতা ১০১

ছবি
  সম্পাদকীয়   চা - পাতা তার শততম সংখ্যা পেড়িয়ে আজ একশত এক তম সংখ্যায় পৌঁছে গেল।  খুব ভালো লাগছে এটা ভেবে।   এই শততম সংখ্যা করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি । অনেক রকমের কবি-লেখক ও মানুষ চিনেছি। অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। অবহেলা পেয়েছি। অনেক লেখা পড়ার সুযোগ পেয়েছি। সম্পাদনা করার এটাই সবচেয়ে বড় লাভ বলে আমার মনে হয়। কবিতা সুবীর সরকার প্রেমসিরিজ একটা হারানো নদীর জন্য একবুক শোক যে ঘোড়া সওয়ারহীন মূলত সে একা জানালার পর্দা সরে যায়। বড়ই গাছে নখ ঘষতে আসে বাঘ। খোলানে ঘিয়ের প্রদীপ। দিবস ও রাত্রি জুড়ে খুব প্রেম বসে                                            থাকে ************************* শুভদীপ আইচ নিস্তার তাঁবু দিয়ে গড়েছি উঠোন দ্বিধা ও দ্বন্দ্বকাল, মুখ চেপে রাখি আমাকে বিব্রত দেখে ফিরে গেছে যে শামুক আমি তার লবণ ও জল আগলে রেখেছি বাতাসে লুকোনো চুমুক আমাদের চারাগাছ আর এক বাগান ঘুম নোনাজল , তাঁবু - লাজ , সম্ভ্রম - উঠোন আমাকে শান্তি দেবে তেমন ডাকিনী নও তুমি ************************* দেবাশিস ভট্টাচার্য পাথরের মতো থাকি তীব্র দহনেও পাথরের মতো নিশ্চুপ হয়ে থাকি, ঠিক যেভাবে থা

চা-পাতা ১০০

ছবি
            কবি কমলেশ রাহারায় স্মরণ সংখ্যা কবি কমলেশ রাহারায় ।  জন্ম ৬ মার্চ ১৯৪৬, অধুনা বাংলাদেশের রংপুর জেলার উলিপুর গ্রামে । ১৯৭১ সালে আলিপুরদুয়ার কলেজে বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতক হওয়ার পর স্বাস্থ্যবিভাবে চাকরি এবং ২০০৬-এ অবসর গ্রহণ । কবিতা লেখালেখি ষাটের দশক থেকে । সম্পাদনা করেছেন 'মাদল', 'সাগ্নিক', 'শিলালিপি' পত্রিকা । পেয়েছেন অনেক স্মারক সম্মাণ । কবি পরলোক গমন করেন ৩১ ডিসেম্বর ২০২১। কবির প্রকাশিত কয়েকটি কবিতা ** ক  *বি*   তা   ** সুদীপ্ত মাজি মন কেমনের লেখা ( উৎসর্গ : কবি কমলেশ রাহারায় )   সেতুর এপারে আলো ওপারে নিকষ অন্ধকার ...   নিচে নদী ।  ছোট নৌকো ।  অসমাপ্ত ঢেউ ...   মাঝিদের জাল , ঝাঁঝি , পলি ও পাথর ... ঘাটে বসে আছে অস্থি বিসর্জন দিতে জলে নামা                                    অস্পষ্ট কেউ ...   নৈঋতের দিক থেকে হাওয়া বইছে জোর ...   তার মুখে জেগে উঠছে ফেলে রেখে যাওয়া তোমার মুখশ্রী , মায়াঘোর ... **************************** প্রশান্ত দেবনাথ একা বসে আছি অনেক দিন পর এসেছি কবির  ঘরে, প্রিয় কবি আর নেই কথাটি বিশ্বাস করতে গিয়ে  মনে হল কী যে

চা পাতা ৯৯

ছবি
  সম্পাদকীয় সত্য কথা সত্য কথার মতোই।  সে সহজ হয়েও সহজ নয়। সরল তবু ভেদ্য নয়। নরম হয়েও ছেদ্য নয়। বললেই বলা যায় তবু কেউই সহজে বলতে চায় না। অপ্রিয় সত্য বলতে নেই। কিন্তু মানুষ সবকিছুকে এতটাই মিথ্যে করে তুলেছে যে অপ্রিয় ব্যাপারগুলোই একমাত্র সত্য হয়ে রয়ে গেছে। সুতরাং সত্য বলতে হলে এখন অপ্রিয় সত্য বলা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ************************************************ কবিতা কমল সরকার ক্ষত উপশমে ঢেকে থাকা কবেকার গোপন ব্যথা, তুমি কেন দেখা দিলে ফের? এখন কেমন দেখো ফুলের লালের মতো তেতে গেল ছাইচাপা তুষের আগুন ; ধুলো মেখে পড়ে থাকা পুরোনো সেতারে একটা সন্ত্রস্ত ইঁদুর দৌড়ে গিয়ে যেন বেজে উঠল অবোধ্য ঝংকার! এই অসহ দহন এই অস্থির মূর্চ্ছনা আমার শরীর থেকে সমস্ত খোলস খুলে ফেলে আমাকে আবারও করে তুলছে ভীরু ও নির্বোধ। অভিমানে ডুবে থাকা নিবিড় প্রত্যাখ্যান! তুমি তো বরাবর জানো — ও ভালো আছে জেনে আমি ভালো নেই ও ভালো নেই জেনে আমি ভালো নেই *************************** অরণ্য আপন সুপ্রিয়া দে ফেলে দেওয়া ওরসের আলুর ঘাটির মতো আছি পড়ে দুপুরের ছায়ায় প্রথম দেখেছিলাম তোমাকে--- এইটুকু শুধু আজ মনে আছে বুকের ব

ধারাবাহিক গদ্য

ছবি
             ধা রা বা হি ক   গ দ্য           সমর দেব     আমার যে দিন ভেসে গেছে ৫.   সে একটা সময় ছিল, যখন উত্তরবঙ্গ মানেই ‘কলকাতার’ কাছে জঙ্গল মাত্র। জঙ্গল সাফারিতে আসতেন অনেকেই। পর্যটকের তালিকায় যেমন থাকতেন নেতা-মন্ত্রী, সরকারি আমলা, তেমনই উত্তরবঙ্গে আসতেন কবি-লেখকরা। বনজঙ্গলের জন্যই ডুয়ার্স ছিল অনেকের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। নেতা-মন্ত্রীদের আসতেই হতো,  ভোট বড় বালাই!  আর, আমলাদেরও প্রায়ই নিরুপায় অবস্থা। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষার প্রশ্নই নেই। কিন্তু, কবি-লেখকরা ডুয়ার্সে আসতেন ছুটির মেজাজে। দু-চারদিন ফুর্তি করে ফিরে যেতেন। উত্তরের লোকজনও নানা জরুরি প্রয়োজনে, সরকারি কাজেকম্মে, এবং কেউ কেউ স্রেফ কলকাতা শহর দেখবার দুর্মর বাসনায় ওমুখো হতেন। যে-সময়ের কথা বলছি, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা তখনও কারও কল্পনাতেও স্থান পায়নি, নিশ্চিত। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন সুবিধেজনক ছিল না, তেমনই নানা ক্ষেত্রেই ছিল প্রায় অলঙ্ঘ্য ব্যবধান, মন-মানসিকতায়, কৌলিন্যে, অর্থনৈতিক কার্যকারণেও। রাজধানী কলকাতার সঙ্গে ভৌগোলিক দূরত্বের চেয়েও বড় ছিল উত্তরের জনপদগুলির প্রান্তিক অবস্থান। আর, আমার জে

চা-পাতা ৯৮

ছবি
  সম্পাদকীয়   হাসপাতালে এসে দেখলাম জন্ম ও মৃত্যুর সার্টিফিকেট দুটোই একই কক্ষে একই ব্যক্তি একই আইনের আওতায় প্রদান করেন । ফাইলদুটো এত পাশাপাশি রাখেন  যেন  মাঝখানের এত বছরের জীবন  কিচ্ছু নয় । জাস্ট তারিখদুটো বসিয়ে দিলেই সব মিটে যায় । জন্মতারিখ আমাদের জানাই থাকে, মৃত্যুর তারিখটা কল্পনা করে আমরা  একটি ঝুলন্ত সেতু তৈরি করে   দুলতে থাকি । দুলতে দুলতে দড়ি নরম হয়ে আসে, একসময় তা ছিঁড়ে যায় । কল্পিত তারিখটি বাস্তবে পরিণত হওয়ার তাগিদ অনুভব করে । কবিতা তুষারকান্তি রায় মায়া    চাঁদ সহ ভেসে যাচ্ছে জল  , আর সাঁতারে ডুবের ছন্দ ,  জলের আওয়াজ ... খলবলে ঢেউ , অতল ছুঁয়ে থাকা কথার সম্বিত ! ভেসে যাচ্ছে ত্রিবেণীর জামতলা , খুঁজে না পাওয়া গানের গন্ধ ,  শ‍্যামচাঁদ লেন এর সুধাময় আলো নিয়ে নীল ও নিলাম   ! তামার মুদ্রার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্নের এখন মুঠো মুঠো ছুটি ... দ‍্যাখো, আমাদের খড়কুটো চাঁদ ওঠা আলো  - এসো!  পাশে বোসো ,  শ্বাস নাও নবমীর জানলায় প্রকাশ‍্য পয়গম নিয়ে কথা হোক !  খোশহাল খবরের কথা শোনো আয়নায় মুখ রাখো, চোখ থেকে মুছে ফেলো বিয়োগের দাগ , লেখো শঙ্খবেলা , কবিতায় জলের ঝিনুক দেবব্রত দাস

ধারাবাহিক গদ্য

ছবি
                 ধা রা বা হি ক   গ দ্য                     সমর দেব     আমার যে দিন ভেসে গেছে           ৪. স্কুল ছুটি হয়েছে। তখন দুপুর বারোটা। আমাদের দল বেঁধে ঘরে ফেরা ছিল এক উৎসব যেন। পাড়ার অনেকেই যদুবাবুর স্কুলে নানা ক্লাসের পড়ুয়া আমরা। স্কুলে যাবার সময় বাড়ির কেউ রীতিমতো হাত ধরে স্কুলে রেখে এলেও, ছুটির পর পাড়ার অনেকের সঙ্গে দল বেঁধে ঘরে ফেরা আমাদের নিয়ম ছিল। আর, এভাবে ঘরে ফেরার সময় যার মাথায় যেমন দুষ্টুমি খেলতো তাতে কোনো বাধা ছিল না। সেটা ছিল সীমাহীন মুক্তির স্বাদ। শাসন নেই, চোখ রাঙানি নেই, ধমক নেই। নেই প্রহারও। বেশ মনে আছে, আমাদের শৈশব-কৈশোরে কারণে অকারণে প্রহার ছিল নিত্য দাওয়াই। অধিকাংশ সময়েই আমরা জানতামই না কেন প্রহার করা হচ্ছে। যেন যারা বয়সে বড় তাদের স্বাভাবিক অধিকার এবং জরুরি কর্তব্যও যখন তখন ছোটদের প্রহার করা! মারধর, নির্যাতন, গালমন্দ বা ভর্ৎসনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আর, তাতে আমরাও অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম! ফলে, তেমন গুরুত্বই দিতাম না। ভাবখানা এমন যে, তোমাদের যা ইচ্ছে করো, আমরাও যা ইচ্ছে করব। কোনটা ভুল বা কোনটা অপরাধ সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। সাধারণত, ভুল বা